ভাঙনের কবলে পড়ার আগেই গোপনে নিলাম করার অভিযোগ উঠেছে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার খিদ্রচাপড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটির। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে নামমাত্র উন্মুক্ত ডাক দেয়ার অভিযোগ উঠেছে যা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা স্থায়ী কমিটির সভাপতিসহ অন্যান্যরা জানেন না।
স্কুলের সুত্র জানায়, ভবনটি যমুনার নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবন স্থানান্তরের দাবি জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন পত্র দাখিল করেন। তার ভিত্তিতে উপজেলা প্রাথমিক কর্মকর্তা নিজস্ব ক্ষমতায় ইউএনও এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতির অবর্তমানেই তার মনোনীত কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ভবনটির জন্য লোক দেখানো উন্মুক্ত ডাকের আয়োজন করেন। নিলামে ভবনটির সর্বোচ্চ দর নির্ধারণ করা হয় দুই লাখ ৪৬ হাজার টাকা। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে সরকারি মূল্যমানের তোয়াক্কা না করেই স্থানীয় ঠিকাদারকে এক লক্ষ ৬০ হাজার টাকায় দিয়ে দেয়া হয়।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফরিদ আহমেদ নয়ন বলেন, “নদীতে বিলীন হবার সম্ভবনা দেখে আমরা একটি লিখিত দরখাস্ত দিয়েছিলাম। ২২ জুন আমাকে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ডেকে নিয়ে বললেন, ‘ভবনের নিলাম করা হয়েছে। এখানে একটি স্বাক্ষর দেন।’ আমি তার নির্দেশে স্বাক্ষর দিয়েছি। আমার জানা মতে, ভবনটি মূল্য ধরা হয়েছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। তবে কত টাকায় বিক্রি হয়েছে, আমার তা জানা নেই।”
বিদ্যালয়ের পরিচলনা কমিটির সভাপতি রতন সরকার বলেন, ‘যেদিন নিলাম হয়েছে তার আগের দিন আমরা একটি বৈঠক করেছি। তার পরেরদিন নিলাম হয়েছে।’
এদিকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান রত্না খাতুন বলেন, ‘আমি সভাপতি হলেও শিক্ষা অফিসার বা অন্য কেউ ওই বিদ্যালয়ের ভবনটি নিলাম হবে- এ বিষয়ে আমাকে কেউ জানাননি। শুধু আমি নই, আমার উপজেলা পরিষদের কেউই বিষয়টি জানেন না। তারা যদি নিলাম করে থাকেও আমি তা জানি না।’
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভবনটি যমুনা নদী গর্ভে বিলীন হতে পারে বিধায় তাড়াহুড়া করে উন্মুক্ত ডাকের মাধ্যমে তা ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করা হয়।’
এর আগে, রোববার (২ জুলাই) দুপুরে বিদ্যালয়ের ভবনটির দু’টি শ্রেণিকক্ষ নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়।