ফরিদপুরের একটি ডাকাতির ঘটনায় আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব; এই ডাকাত সদস্যরা ডাকাতির সময় অস্ত্রের পাশাপাশি ব্যবহার করতো ককটেলও।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।
সোমবার ও মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামপুর, লালবাগ, কামরাঙ্গীরচর, শ্যামলী, দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ ও মাদারীপুর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. ইসমাইল সরদার ওরফে লিটন, মো. মামুন সরদার, শেখ জাহাঙ্গীর, জলিল ওরফে সম্পদ বেপারী, রুবেল মোল্লা, মো. হারুন, মো. সুমন মাতুব্বর ও মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন।
র্যাব জানায়, ফরিদপুরের কোতয়ালী এলাকার বাখুন্ডা বাজারে গত ২৭ মে রাতে দেশীয় অস্ত্রসহ অজ্ঞাতনামা ১২/১৪ জনের একটি ডাকাত দল স্বর্ণের দোকান, মুদি দোকান, ইলেক্ট্রনিক্সের দোকনসহ বেশ কয়েকটি দোকানের বিপুল পরিমাণ সম্পদ ডাকাতি করে পলিয়ে যায়।
এ ঘটনায় ডাকাতি হওয়া দোকানের মালিকরা ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় অজ্ঞাতনামা ১২/১৪ জনের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা করেন। এই মামলায় আন্তঃজেলা ডাকাত চক্রের সর্দারসহ ওই ৮ জনকে গ্রেপ্তার র্যাব।
র্যাব কর্মকর্তা মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন জানান, এই ডাকাত দলে রয়েছে ৩৫ জনের মতো সদস্য। ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ডাকাত দলটির এই সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের ডাকাতি করে আসছিল। এদের রয়েছে বড় বড় তিনটি গ্রুপ। এসব গ্রুপের রয়েছে আবার দুই তিনটি সাবগ্রুপও। অস্ত্রের পাশাপাশি ককটেল ব্যবহার করে আতঙ্ক সৃষ্টি করতো তারা।
তিনি জানান, এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত কাটার (তালা কাটায় ব্যবহৃত), রুপার অলংকার ও ১৫ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া সুমন মাতুব্বর ও আব্দুল্লাহ আল মামুনের কাছ থেকে ডাকাতির জন্য ব্যবহৃত ককটেল তৈরির সালফার ও দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
ফরিদ উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তার ডাকাত চক্রের সদস্যরা গত ২৭ মে বাখন্ডা বাজার ডাকাতির সঙ্গে তাদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। তারা ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে, বরিশাল-ফরিদপুর, মাওয়া- গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন আন্তজেলা মহাসড়কের বিভিন্ন এলাকায় বাস-ট্রাকসহ বিভিন্ন প্রকার যানবাহন থামিয়ে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা পয়সা স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র ডাকাতি করে আসছিল।
র্যাব জানায়, ডাকাত সুমনের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, মারামারি ও হত্যা চেষ্টাসহ মোট ২০টি মামলা রয়েছে। ডাকাত মামুন সরদারের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও মারামারিসহ তিনটি মামলা রয়েছে। ডাকাত সর্দার ইসমাইল সরদার লিটনের বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ডাকাত হারুন বেপারীর বিরুদ্ধে দুটি ডাকাতি ও একটি অপহরণ মামলা রয়েছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের ফরিদ উদ্দিন বলেন, ডাকাত দলের সদস্যরা ছোটখাটো ব্যবসা করতো। কিছু রয়েছে যখন যেই কাজ পায় সেটা করতো। আর যেহেতু অপরাধপ্রবণ, তারা দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতি করতো। ফরিদপুরে ডাকাতির ঘটনায় আমরা ১৫ জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছি। এই ঘটনায় তারা ৫০ লাখ টাকা মালামাল নিয়েছে। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে তারা এই ডাকাতি করতো। তারা যেসব জায়গায় ডাকাতি করবে সেখানে আগে পর্যবেক্ষণ করে নেয়।