বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

গভীর সমুদ্র থেকে পাইপলাইনে তেল খালাসের যুগে বাংলাদেশ

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৩ জুলাই, ২০২৩ ২২:০৭

বর্তমানে বছরে ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিশোধন করতে পারে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি। এর দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে পরিশোধন সক্ষমতা ৩০ লাখ টন বেড়ে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত হবে।

বহুল প্রতীক্ষার পর অবশেষে সাগরে বড় ট্যাংকার থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে জ্বালানি তেল খালাস শুরু হয়েছে। সৌদি আরব থেকে আনা ৮২ হাজার মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল বঙ্গোপসাগরের গভীর থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক খালাসের মধ্য দিয়ে তেল খালাসের নতুন যুগে প্রবেশ করেছে বাংলাদেশ।

রোববার দুপুরে পাইপলাইনে তেল খালাসের এ কার্যক্রম শুরু হয় বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।

সোমবার তিনি জানান, সৌদি আরব থেকে আনা ৮২ হাজার মেট্রিক টন ক্রুড অয়েলের পরীক্ষামূলক খালাস শুরু হয়েছে গভীর বঙ্গোপসাগরে। ১১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন দিয়ে এই তেল আসবে চট্টগ্রামের ইস্টার্ন রিফাইনারিতে। ৮ হাজার কোটি টাকার এ প্রকল্পের কারণে তেল খালাসের সিস্টেম লস ও খরচ কমার পাশাপাশি সময় ২৫ দিনের সময় কমে মাত্র ২ দিনে নেমে আসবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দেশের একমাত্র তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারিতে বর্তমানে ৫ লাখ টন তেল সংরক্ষণ সক্ষমতা আছে। এর মধ্যে ক্রুড অয়েল সংরক্ষণ সক্ষমতা দুই লাখ ২৫ হাজার টন। বাকিটা পরিশোধিত তেল রাখার স্টোরেজ। বর্তমানে দেশে সরকারিভাবে সমুদ্রপথে ৬০ লাখ টনেরও বেশি জ্বালানি তেল আমদানি হয়। এছাড়া বেসরকারি বিদ্যুতকেন্দ্রের ফার্নেস তেলসহ প্রায় এক কোটি টন তেলের প্রয়োজন হয়।

বাসসের খবরে বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা এবং কর্ণফুলী নদীর চ্যানেলের নাব্যতা কম হওয়ায় মাদার অয়েল ট্যাংকারগুলো সরাসরি খালাস করা যায় না। এর ফলে এসব ট্যাংকার গভীর সমুদ্রে নোঙর করে ছোট ছোট লাইটারেজ ভেসেলের মাধ্যমে অপরিশোধিত তেল খালাস করতে হয়। তাতে এক লাখ ডিডব্লিউটি ট্যাংকার খালাস করতে সময় লাগে ১১ দিন। এই পদ্ধতিটি ঝুঁকিপূর্ণ, ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ হওয়ায় এইচএসডি স্থানান্তরের জন্য ২০১৫ সালে পাইপলাইন বসানোর প্রকল্পটি (সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং) হাতে নিয়েছিল সরকার।

প্রকল্পের কার্যপত্র থেকে জানা গেছে, মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নে উপকূল থেকে ছয় কিলোমিটার পশ্চিমে বঙ্গোপসাগরে সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) স্থাপন করা হয়েছে। এসপিএম থেকে ৩৬ ইঞ্চি ব্যাসের দুটি আলাদা পাইপলাইনের মাধ্যমে ক্রুড অয়েল ও ডিজেল আনলোড করা হবে। ১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সেই পাইপলাইন প্রথমে নিয়ে আসা হবে কালারমারছড়া পাম্প স্টেশন অ্যান্ড ট্যাংক ফার্মে (সিএসটিএফ)। সেখান থেকে বিভিন্ন পাম্পের মাধ্যমে ৭৪ কিলোমিটার পাইপলাইনের মাধ্যমে তেল চলে যাবে আনোয়ারা উপজেলার সমুদ্র উপকূলে। সেখান থেকে আবার ৩৬ কিলোমিটার পাইপলাইন পাড়ি দিয়ে তেল নিয়ে যাওয়া হবে পতেঙ্গার ইস্টার্ন রিফাইনারিতে।

এ প্রসঙ্গে ইস্টার্ন রিফাইনারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক লোকমান হোসেন বলেন, ‘এসব পাইপলাইন ২০ হাজার টন তেল ধারণে সক্ষম। এসপিএম থেকে মহেশখালীতে এসে যেখানে পাম্প হবে, সেখানে দুই লাখ টন ধারণ ক্ষমতার একটি স্টোরেজ নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ক্রুড অয়েল থাকবে এক লাখ ২৫ হাজার টন। বাকি ৭৫ হাজার টন হবে ডিজেল বা পরিশোধিত তেল। এই পাইপলাইন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে তেলের সংরক্ষণ সক্ষমতা বেড়েছে।’

চার হাজার ৯৩৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা থাকলেও ইতোমধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ তিনবার বৃদ্ধি করা হয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গে ব্যয়ও বেড়ে ৭ হাজার ১২৫ কোটি টাকায় ঠেকেছে।

বর্তমানে বছরে ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল পরিশোধন করতে পারে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রায়ত্ত তেল শোধনাগার ইস্টার্ন রিফাইনারি। এর দ্বিতীয় ইউনিট চালু হলে পরিশোধন সক্ষমতা ৩০ লাখ টন বেড়ে ৪৫ লাখ টনে উন্নীত হবে।

এ বিভাগের আরো খবর