পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নারায়ণগঞ্জে চারজন নিহত হয়েছেন। নারায়ণগঞ্জ সদরের ভিন্ন ভিন্ন এলাকায় কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট কারের চাপায় তারা নিহত হন।
সোমবার সকালে সাইনবোর্ড এলাকায় হিমাচল পরিবহন নামের একটি বাসচাপায় এস এম সাইদুর রহমান নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হন।
এ ঘটনায় প্রায় এক ঘন্টা যানচলাচল বন্ধ করে সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
নিহত সাঈদুর রহমান নারায়ণগঞ্জ সদরের গোগনগর এলাকার মৃত আলতাফ হোসেনের ছেলে। অলিম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডে ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি।
পুলিশ জানায়, সকালে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে কর্মস্থলে ফিরছিলেন সাঈদুর রহমান। পথে সাইনবোর্ড এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয় হিমাচল পরিবহন। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন সাঈদুর। এসময় সাঈদুর রহমান রাস্তায় পড়ে গেলে তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বাসটি। এসময় স্থানীয়রা চালকসহ বাসটিকে আটক করে।
ফতুল্লা মডেল থানার ওসি নূর আযম বলেন, ‘সাঈদুরকে চাপা দেয়া হিমাচল বাসের চালক শহীদুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। বাসটিও জব্দ করা হয়েছে।’
বিকেলে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের জালকুঁড়ি এলাকায় বন্ধু পরিবহন নামের একটি বাসের ধাক্কায় জয়দেব সাহা নামে একজন নিহত হন।
নিহত ৫৫ বছর বয়সী জয়দেব সাহা সিএনজি চালিত অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে পুলিশ জানায়, বিকেলে জালকুড়ি এলাকা দিয়ে অটোরিকশায় করে যাওয়ার সময় বন্ধু পরিবহন নামের ওই বাসের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে যান জয়দেব সাহা। এসময় তাকে চাপা দেয় বাসটি। ফলে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি।
ওসি নূর আযম বলেন, ‘বন্ধু পরিবহন নামের ওই বাসটিকে জব্দ করা হয়েছে। তবে চলক পালিয়ে যাওয়ায় তাকে আটক করা যায়নি।’
চালককে আটকের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
এর আগে সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল এলাকায় ট্রাকচাপায় জিহাদ নামে অটোরিকশার এক যাত্রী ও শহরের বাবুরাইল বৌ-বাজার এলাকায় প্রাইভেটকারের চাপায় আলমগীর নামের এক পথচারীসহ দু’জন নিহত হন।
রোববার রাত সাড়ে নয়টা থেকে দশটার মধ্যে ঘটনাগুলো ঘটে।
নিহত জিহাদ হোসেন জামালপুর জেলার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে। তিনি আদমজী ইপিজেডের একটি গার্মেন্টেসের টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
অন্যদিকে নিহত আলমগীর হোসেন নারায়ণগঞ্জ শহরের পাইকপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি আইডিয়াল নামে একটি মিষ্টান্ন ভান্ডারের ম্যানেজার।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আনিচুর রহমান জানান, বাবুরাইল বৌ-বাজার এলাকায় প্রাইভেটকারের চাপায় নিহত আলমগীরকে হাসপাতালে নেয়ার পথেই তিনি মারা যান। আর জিহাদ হোসেন ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
তিনি বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে নববধূকে নিয়ে ঘুরতে বের হলে গোদনাইল এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দিলে জিহাদ ছিটকে রাস্তায় পড়ে যান। ওই সময় ট্রাকটি তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।’
চারটি ঘটনাতেই সড়ক আইনে মামলা হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।