গণঅধিকার পরিষদের আহবায়ক রেজা কিবরিয়া এবং সদস্য সচিব নূরুল হক নূরের পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন ও মামলা করা বিষয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘রাজনীতিতে রেজা কিবরিয়া এবং নূরুল হক নূরু কিছু কৌতুকের জন্ম দিয়েছে। তাদের কোনো জনভিত্তি নেই, তারা শুধু টেলিভিশনে আর নিজেদের মধ্যে কাদা ছোঁড়াছুড়িতেই ব্যস্ত। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সংশ্রব নেই।’
সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ এট এ গ্ল্যান্স’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
ড. হাছান বলেন, ‘যে সমস্ত কারণে তাদের দলের ভাঙ্গন- যেমন: তহবিল তছরূপ, কারও সঙ্গে আঁতাত, বিদেশি কোনো শক্তি বা অপশক্তির সঙ্গে মেলামেশা, অর্থ গ্রহণ- এগুলো তাদের জন্য প্রচণ্ড অবমাননাকর। তাদের এ বাহাস রাজনৈতিক কৌতুক ছাড়া অন্য কিছু না।’
‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে নূরের আঁতাত ও নির্বাচনে আসার জন্য টাকার প্রস্তাব করা হয়েছে’- রেজা কিবরিয়ার এমন অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রেজা কিবরিয়া তো অনেক কথাই বলেছেন। আবার নূরও রেজা কিবরিয়া সম্পর্কে অনেক কথাই বলেছেন। নূরের বিরুদ্ধে এ ধরণের অভিযোগ তো নানা সময়ে নানাজন করেছে। আমাদের দলের সঙ্গে নূরের কোনো যোগাযোগ নেই।
‘সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, নূরের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন যে, নূর ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার এজেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেছে; অন্তত তিনবার। সেটার কোনো কার্যকর প্রত্যুত্তর নূরের কাছ থেকে আসেনি। নূর ও রেজা কিবরিয়ার সাম্প্রতিক বাহাস জনগণ উপভোগ করছে।’
তত্ত্বাধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই ওঠে না
‘নির্বাচনকালীন তত্ত্বাধায়ক সরকার নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই ওঠে’ না মন্তব্য করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিএনপি দেশে একটি গন্ডগোল পাকাতে চায়; বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়। যেহেতু তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করাই তাদের দাবি এবং আন্দোলনের উদ্দেশ্য, তাই এ নিয়ে সংলাপের কোনো প্রয়োজনীয়তা নেই।’
তিনি বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে এবং সংবিধানে এ বিষয়ে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। সে সময়ে সরকারের আকার ছোট হবে, নাকি বর্তমানে যারা মন্ত্রিসভায় আছে, তারা সবাই থাকবে, কিংবা আমাদের শরিকদের মধ্য থেকে কাউকে নেওয়া হবে- সেগুলো প্রধানমন্ত্রী দেখবেন; তিনিই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। বিএনপি যদি সংসদে থাকতো, হয়ত সেক্ষেত্রে তাদেরও সুযোগ থাকত।’
‘সরকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় কাজে ব্যবহার করছে’- বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভীর এমন মন্তব্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ভালো কাজ করছে বিধায় দেশে আমরা জঙ্গি দমন করতে পেরেছি, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো আছে। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী তাদের অগ্নি-সন্ত্রাসী বাহিনীর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিধায় তারা এখন অগ্নি-সন্ত্রাস করতে পারছে না।
‘আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করছে। তারা শুধু সন্ত্রাসে অভিযুক্ত আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী ব্যবহৃত হচ্ছে না।’
‘বাংলাদেশ এট এ গ্ল্যান্স’ বইটি সম্পর্কে এসময় মন্ত্রী বলেন, ‘এটি মূলত বিদেশে আমাদের মিশনগুলোর চাহিদা পূরণ করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। বিদেশে দেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরা অত্যন্ত প্রয়োজন। আমাদের দেশে যে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত আছে, এটা অনেকেই জানে না। পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ সবক্ষেত্রেই দেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি গুরুত্বপূর্ণ।
চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া এবং পরিচালক (প্রশাসন) মোহাম্মদ আলী সরকার বইটির মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।