বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘কালু মামাকে’ বিক্রি করে খরচই ওঠাতে পারেননি দাবি বাহাদুরের

গরুটির মালিক বাহাদুর বলেন, ‘আমি যা দিয়ে কিনেছিলাম আর যা খরচ হয়েছে তাই ওঠেনি পরিশ্রমের মূল্য বাদ দিলাম। লাভ বলতে কিছুই থাকল না। তবে যেসব খামারি বড় ষাঁড় গরু লালন করেন তাদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। কারণ বাজারে বড় গরুর চাহিদা কম। অন্যদিকে বড় গরুর চাহিদা থাকলেও তুলনামূলক দাম কম হাঁকা হয়। তখন গরুর লালনপালনে খরচ বেশি হলেও কম দামে বিক্রি করতে হয়। আমি বড় গরু পালন করে লোকসানে পড়ে গেলাম।’

কোরবানির ঈদে শেরপুর সদরে আলোচনায় ছিল ‘কালু মামা’ নামের বিশাল আকারের ষাঁড়। এ নিয়ে মালিকের অনেক আশা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আশা পূরণ হয়নি।

২২ মণ ওজনের ষাঁড় ‘কালু মামা’র দাম হাঁকানো হয়েছিল ১০ লাখ টাকা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। এতো কম দাম পেয়ে হতাশ গরুর মালিক। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আর বড় গরু পালন করবেন না।

‘কালু মামার’ মালিক শেরপুর পৌরসভার কসবা কাঠগড় এলাকার বাহাদুর ইসলাম। তিনি পেশায় গাড়ির ড্রাইভার। গাড়ি চালিয়ে আয় করে লালনপালন করেছিলেন ‘কালু মামাকে’।

‘কালু মামার’ মালিক বাহাদুর ইসলাম জানান, পাবনায় করোনার সময় ঘুরতে গিয়ে সেখান থেকে ‘কালু মামার’ কিনে এনেছিলেন। পাবনা থেকে দুই বছর আগে হলস্টেইন জাতের ষাঁড় গরুটি ৮৫ হাজার টাকায় কিনেন তিনি। সেখান থেকে কিনে বাড়িতে আনাসহ খরচ হয় ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রায় ২ বছর ধরে গরুটি লালনপালন করেন। প্রতিদিন এর পেছনে একজন লোকের খাটাখাটনি হয়েছে। কালো গায়ের রং, উচ্চতা ৫ ফুট আর লম্বায় ৯ ফুট। ২২ মণ ওজনের ‘কালু মামাকে’ প্রস্তুত করেছিলেন এবারের কোরবানির জন্য। শান্ত স্বভাবের ‘কালু মামা’ প্রতিদিন ছোলা, ভুট্টা, ঘাস ও ভুসির পাশাপাশি পছন্দ করতো আঙুর ফলও। এটির পেছনে খামারির দৈনিক খরচ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা। তার সব খরচসহ এ পর্যন্ত সাড়ে ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

তিনি আরও জানান, তিনি এবার ‘কালু মামাকে’ বিক্রির জন্য ১০ লাখ টাকা চেয়েছিলেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে কেনার জন্য লোকজন এসে দরদাম করলেও শেষে বেশি লাভে বিক্রির আশায় ঢাকার গাবতলীতে নিয়ে দেখেন বড় গরুর চাহিদা কম। ঢাকায় নিতে তার আরও খরচ হয় ১০ হাজার টাকা। পরে শুধু লালনপালনের খরচেই লোকসান দিয়ে গরুটিকে বিক্রি করে দিতে হয় তাকে।

গরুটির মালিক বাহাদুর বলেন, ‘আমি যা দিয়ে কিনেছিলাম আর যা খরচ হয়েছে তাই ওঠেনি পরিশ্রমের মূল্য বাদ দিলাম। লাভ বলতে কিছুই থাকল না। তবে যেসব খামারি বড় ষাঁড় গরু লালন করেন তাদের সতর্ক থাকা প্রয়োজন। কারণ বাজারে বড় গরুর চাহিদা কম। অন্যদিকে বড় গরুর চাহিদা থাকলেও তুলনামূলক দাম কম হাঁকা হয়। তখন গরুর লালনপালনে খরচ বেশি হলেও কম দামে বিক্রি করতে হয়। আমি বড় গরু পালন করে লোকসানে পড়ে গেলাম। এবার ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা ছিল বেশি। এরপর থেকে আমি আর বড় গরু পালবো না। ছোট বা মাঝারি আকারের পালবো।’

স্থানীয় বাসিন্দা আরফিন মিয়া বলেন, ‘‘কালু মামাকে’ বাহাদুর ভাই অনেক টাকা খরচ করে বড় করেছিল ভালো দামে বেচার আশায়। আর যে দামে তিনি বিক্রি করতে পেরেছেন তাতে অনেক লোকসান হয়েছে। এমনভাবে লোকসান হলে বড় গরুর খামারিরা আগ্রহ হারাবে।’’

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শেরপুরে এবার কোরবানির পশুর চাহিদা ছিল প্রায় ৫৭ হাজার। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ত্রিশ হাজার উদ্বৃত্ত পশু রপ্তানি করা হয়েছে দেশের বিভিন্ন বাজারে। তবে জেলায় ছোট ও মাঝারি গরুর চাহিদা বেশি ছিল। কিন্তু বড় গরুর চাহিদা কম ছিল। জেলায় এবার মোট ২০টি কোরবানির হাট বসেছিল। আর পাশপাশি ৫টি অনলাইন প্লাটফর্ম ছিল।

এ বিভাগের আরো খবর