দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তন করাই লক্ষ্য জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে।
তিনি বলেন, ‘একটি বাড়ি একটি খামার’, কমিউনিটি ক্লিনিক, ডিজিটাল বাংলাদেশ, ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ প্রকল্প বাস্তবায়ন ও শতভাগ বিদ্যুৎ দিয়ে দেশের ভাগ্য পরিবর্তন করা হয়েছে।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রোববার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা ও মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। দেশবাসীর মুখে হাসি ফোটাতে বঙ্গবন্ধু দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন।
‘আর আমার লক্ষ্য বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। সে লক্ষ্যেই ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে এ পর্যন্ত আসা। গত সাড়ে ১৪ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা এবং সে বছরের ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘দেশের অগ্রগতি থামিয়ে দেয়ার জন্যই এই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়। বঙ্গবন্ধুকে এমন সময়ে হত্যা করা হয়েছিল যখন দেশ অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল।’
টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়া আসনের জনগণকে কৃতিত্ব দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনারা আমার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নিয়েছেন, তবে দেশের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে আমাকে আরও সময় দিতে হবে।
‘সাধারণত, অন্যান্য নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্যরা শুধু তাদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার দেখাশোনা করেন। আমাকে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকার উন্নয়নে কাজ করতে হয়। কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়ার বাসিন্দারা আমার নির্বাচনী এলাকার দায়িত্ব নেয়ার কারণেই আমি তা করতে পেরেছি।’
তিনি বলেন, ‘ছয় বছর নির্বাসনে থেকে দেশে ফেরার পর দেশবাসীর ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমি দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছি। মাইলের পর মাইল কাদামাটি মাড়িয়ে।, নৌকায়, সাম্পান, ট্রলার, ডিঙি নৌকা, ভ্যান–কোনটায় চড়িনি?
‘সবকিছুতে আমার চড়া আছে। এভাবে বাংলাদেশ ঘুরেছি, দেখেছি। আর সেটা বুঝে বুঝে উন্নয়নের জন্য কর্মসূচি হাতে নিয়েছি। সারা দেশে ঘুরে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা ব্যবহার করেই আমি বাংলাদেশকে এমন একটি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিয়ে আসতে পেরেছি।’
মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ার উন্নয়ন নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী ও জনপ্রতিনিধিদের অভিজ্ঞতা শুনতে চান।
ওই সময় বয়সজনিত কারণে শেখ হাসিনা অবসরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলে স্থানীয় জনগণ তাকে দেশ ও জনগণের কল্যাণে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকার অনুরোধ জানান। তারা শেখ হাসিনাকে পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করেন।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল উপস্থিত ছিলেন। মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল খায়ের। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ।
এর আগে শনিবার দুই দিনের গোপালগঞ্জ সফরে কোটালীপাড়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। ওই সময় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাকে স্বাগত জানান। পরে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন দলের সভাপতি। উদ্বোধন শেষে কার্যালয় চত্বরে তিনটি গাছের চারা রোপণ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে তার সঙ্গে রয়েছেন ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। রোববার বিকেলে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে তার।