জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করে গেছেন তা পূরণের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা এই দেশ স্বাধীন করেছেন। তিনি যে লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, সেটা আমি পূরণ করব। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়ন করা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা-এটাই আমাদের লক্ষ্য। যারা চায়নি আওয়ামী লীগ কোনোদিন ক্ষমতায় আসুক, এদেশের মানুষ আবার পেট ভরে ভাত খাক, মানুষের মাথা গোঁজার ঠাঁই হোক, রোগে চিকিৎসা পাক, শিক্ষা পাক-তাদের প্রতি এটা আমাদের চ্যালেঞ্জ।’
শনিবার গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে আয়োজিত এক সভায় প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল পদ্মা সেতু নির্মাণ। মিথ্যা অপবাদ দিতে চেয়েছিল। নিজের ভাগ্য তো গড়তে আসিনি। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য গড়তে এসেছি। তারপরও যে অপবাদ দিয়েছে, তার প্রতিবাদ করে নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করতে পেরেছি। এটাই হলো সবচেয়ে বড় কথা। সেই শক্তিটা কিন্তু আপনারা জুগিয়েছেন।’
কোটালীপাড়াবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এ নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আপনারাই আমার সব দায়িত্ব নিয়েছেন। আমার নির্বাচন, আমার সব কিছুই আপনারা দেখেন। আমার টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মানুষগুলোই তো আমার সবচেয়ে বড় শক্তি।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আজকে সারা বিশ্বে উজ্জ্বল করতে পেরেছি। যারা বাংলাদেশের কোনো ভালোই দেখে না চোখে। চোখ থাকতে যারা অন্ধ, তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার নেই। তারা দেখে না, কিন্তু ভোগ করে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, আজকে সবার হাতে মোবাইল ফোন, অনলাইন, সবাই সারা দিন কথা বলে। এতগুলো টেলিভিশন দিয়ে দিয়েছি। সারাদিন কথাবার্তা বলে, তারপরও যদি বলে কিছুই বলতে পারি না, কথা বলার অধিকার নেই। সব বলেই বলে-কথা বলার অধিকার নেই। এদের ব্যাপারে করুণা করা ছাড়া আর কিছুই নেই। আমরা তাদের করুণাই করি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ফসল আমাদেরই ফলাতে হবে। আমাদের খাদ্য চাহিদা আমরা পূরণ করব। আর যা উদ্বৃত্ত থাকে তা বরং অন্যদের দিতে পারব। সেটাই আমরা করব। আমরা খাদ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা করছি। প্রত্যেক এলাকায় এলাকায় খাদ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেব। যা যা সহযোগিতা করার আমরা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতা দেশটা স্বাধীন করে গেছেন। তার স্বপ্ন পূরণ করে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়া আমার লক্ষ্য। আজকে হতদরিদ্র মাত্র ৫ শতাংশ, সেটাও যেন না থাকে, তার জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। একজনও হতদরিদ্র বলে কেউ থাকবে না। প্রত্যেকেরই একটি ঘর, জমি আর জীবন জীবিকার ব্যবস্থা ইনশাআল্লাহ আমরা করতে পারব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ দিচ্ছি। শিক্ষার ব্যবস্থা করেছি। স্কুলগুলোকে আমরা নতুনভাবে তৈরি করে দিচ্ছি। পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছি। বৃত্তি দিচ্ছি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে আমরা বৃত্তি দেব। বয়স্কভাতা, বিধবাভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আমরা মানুষকে সহযোগিতা করে যাচ্ছি।’
দুই দিনের সফরে শনিবার গোপালগঞ্জে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। রোববার টুঙ্গিপাড়ায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। নিজ জেলায় প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা।