ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলামের পূর্বঘোষিত ৮ ঘণ্টায় শতভাগ কোরবানির বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন হয়েছে। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটিতে ২৪ ঘণ্টায় বর্জ্য অপসারণের ঘোষণা দিলেও ১১ ঘণ্টায় তা সম্পন্ন করেছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বৃহস্পতিবার বেলা ২টার দিকে ঢাকা উত্তর সিটির ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের মণিপুর এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
দুপুর ২টা থেকে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু করে রাত সাড়ে নয়টায় আট ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সবগুলো ওয়ার্ডের শতভাগ বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন করেন মেয়রের পরিচ্ছন্নকর্মীরা। দশটি অঞ্চলে ঈদের দিন রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ২৭১৩টি ট্রিপে প্রায় ১৪,৫০০ (চৌদ্দ হাজার পাঁচশত) টন বর্জ্য অপসারণ করা হয়।
ডিএনসিসির বর্জ্য বিভাগের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫৪টি ওয়ার্ডের সব এলাকার শতভাগ বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সকল বর্জ্য সংগ্রহ করে এসটিএসে রাখা হয়েছে। সেগুলো ল্যান্ডফিলে ট্রান্সফার করা হচ্ছে।
বিভিন্ন অঞ্চলে ঘুরে ঘুরে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিদর্শন ও সরাসরি তদারকি করেন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শেষে মনিপুর এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। এরপর তিনি আগারগাঁও, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, মগবাজার, মধুবাগ, রামপুরা, খিলগাঁও, প্রগতি সরণিসহ উত্তরা এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সশরীরে পরিদর্শন করেন।
এছাড়াও ডিএনসিসির দশটি অঞ্চলের তদারকি করার জন্য পাঁচজন কর্মকর্তার সমন্বয়ে পাঁচটি গ্রুপ গঠন করা হয়। পাঁচটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, প্রধান প্রকৌশলী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী। প্রতিটি গ্রুপ দুটি করে অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সার্বক্ষণিক মনিটরিং করে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বর্জ্য অপসারণে ১১ হাজার কর্মী নিয়োজিত ছিল। এ কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ডিএনসিসি নগর ভবনের নিচতলায় অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়। কন্ট্রোল রুমের নম্বর: ০২-৫৫০৫২০৮৪, ১৬১০৬। এছাড়াও সবার ঢাকা অ্যাপেও তথ্য সংগ্রহ করে ব্যবস্থা নেয়া হয়। সকাল থেকে ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার (EOC) থেকে মনিটরিং করা হয়।
সন্ধ্যায় পরিদর্শন শেষে বর্জ্য বিভাগ ও তদারকির জন্য গঠিত পাঁচটি গ্রুপকে ঈদের দ্বিতীয় দিনর কোরবানির বর্জ্য দ্রুত সময়ে পরিষ্কার করার নির্দেশ দেন ডিএনসিসি মেয়র।
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘সবার সহযোগিতায় পূর্বঘোষিত আট ঘণ্টার আগেই ঢাকা উত্তর সিটির কোরবানির বর্জ্য শতভাগ অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে। সচেতন নাগরিকদের আন্তরিক সহযোগিতায় এটি করতে পেরেছি। আমি নগরবাসীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আগামী দিনেও ঢাকা শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে জনগণ ও সিটি করপোরেশনকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিদর্শনে অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ.কে.এম শফিকুর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কমডোর এস এম শরিফ-উল ইসলাম, ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (অ.দা.) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, কাউন্সিলরবৃন্দ এবং ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
এদিকে গতবারের মতো এবারও ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কোরবানির বর্জ্য শতভাগ অপসারণের ঘোষণা দিলেও ১১ ঘণ্টায় তা সম্পন্ন করেছেন মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
দুপুর ২টায় বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়ে রাত সোয়া একটায় তা শেষ হয়। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটির ৩৯ ওয়ার্ডেই প্রথম দিনের কোরবানির পশুর শতভাগ বর্জ্য অপসারণ করা হয়।