সরকারের ব্যর্থতায় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জনগণ অতিষ্ট হয়ে গেছে। এবারের ঈদ তাই সামগ্রিকভাবে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার ঈদুল আজহার নামাজ শেষে সকাল ১০টার দিকে ঠাবুরগাঁও শহরের কালিবাড়ির বাসভবন থেকে দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর পর সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বরাবর বলে আসছি সামগ্রিকভাবে মূল্যস্ফীতি যেভাবে হয়েছে, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য যেভাবে বেড়েছে, সেটা এখন অসহনীয় পরিস্থিতিতে পরিণত হয়েছে। সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে, পরিকল্পনার অভাবে এবং একই সময়ে দুর্নীতির কারণে দেশের জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে।
‘মন্ত্রী নিজেই সিন্ডিকেটের কথা বলেন, অথচ সে সিন্ডিকেট প্রতিহত না করার কারণে যে জিনিসগুলোর দাম কম ছিল সেগুলো লাফিয়ে বেড়েছে। আদার দাম ২০০ টাকা বেড়েছে, কাঁচামরিচসহ অন্যান্য জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে নিম্ন আয়ের মানুষই শুধু নয়, মধ্যবিত্ত মানুষও আজ অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়েছে। এ জন্য এবারের ঈদ সামগ্রিকভাবে সাধারণ মানুষের কাছে আনন্দের বার্তা নিয়ে আসেনি।’
তিনি বলেন, ‘ঈদুল আজহার মূল বিষয়টি হচ্ছে ত্যাগ। আমরা যে পশু কুরবানি দেই, তার মূল উদ্দেশ্যই ত্যাগ। অর্থাৎ মানুষের জন্য ত্যাগ স্বীকার করা; পাড়া-প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনের হক আদায় করা। বৈষম্যহীন সমাজ সৃষ্টিতে ঈদুল আজহা একটি বড় ইবাদত, বড় উৎসব। কিন্তু এ উৎসব সাধারণ মানুষ করতে পারছে না। আমরা তাদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করছি।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত এক বছর ধরে আমরা আন্দোলন করছি৷ আমাদের ১৭ নেতা-কর্মী আন্দোলনে প্রাণ দিয়েছেন। মোট কথা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এ সরকার ব্যর্থ হয়েছে, দেশের অর্থনীতি বিপদের দিকে চলে গেছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে স্বচ্ছতার অভাব।’
‘গতকালও দেখেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তারা বলেছে, যে সমস্ত দেশের অর্থনীতিতে স্বচ্ছতা নেই তার মধ্যে বাংলাদেশ আছে। অর্থাৎ আমরা যে কথাগুলো বলে আসছি, এটা কেবল আমাদের (বিএনপির) কথা নয়। জাতীয় অর্তনীতিবিদরা বলেছে এবং বাইরের দেশের রিপোর্টেও এসেছে- বাংলাদেশে অর্থনীতির স্বচ্ছতা নেই, রাজনীতিতেও স্বচ্ছতা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে দেশের সমগ্র মানুষের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি আন্দোলন সংগ্রাম অংশগ্রহণ করে এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচন দেয়ার।’
এ সময় ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন, অর্থ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম শরিফ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মোহাম্মদ কায়েসসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।