ঈদুল আজহায় রাজধানীতে কোরবানি শুরুর ৮ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য পরিষ্কার কাজ শেষ করার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) কোরবানির বর্জ্য অপসারণের জন্য সময় নিয়েছে ২৪ ঘণ্টা।
রাজধানীতে বৃহস্পতিবার কোরবানি শুরুর পর থেকে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কাজে অংশ নিতে দুই সিটির প্রায় ২০ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মী মাঠে থাকবেন। এই কাজ সুষ্ঠুভাবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে দুই সিটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, পরিবহন ও যান্ত্রিক বিভাগের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
ডিএনসিসি বলছে, বর্জ্য অপসারণ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য গঠন করা হয়েছে তদারকি টিম। আর পরিচ্ছন্নতার কাজে অংশ নেবে তাদের ১১ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মী। এছাড়া এই সিটির বাসিন্দাদের বর্জ্য সংরক্ষণের জন্য বিনামূল্যে দেয়া হবে ৯ লাখ বায়োডিগ্রেডেবল (পরিবেশ-বান্ধব) পলিব্যাগ। পরে সেগুলো সিটি করপোরেশনের কর্মীরা নিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে সম্প্রতি ডিএনসিসির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি যখন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছি তখন কোরবানির বর্জ্য অপসারণ হতো ৪৮ ঘণ্টায়। এর পরের বছর থেকে কোরবানির বর্জ্য অপসরণ শেষ করতাম ২৪ ঘণ্টার মধ্যে। গত কোরবইনর ঈদে বর্জ্য অপসারণ করেছি ১২ ঘণ্টায়।
‘এবার ঘোষণা দিতে চাই, সবার চেষ্টায় এই ঈদে আমরা উত্তর সিটি করপোরেশন ৮ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির বর্জ্য অপসারণ করব। এ সময় কোরবানির বর্জ্য অপসারণে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি নিজেও মাঠে থাকব।’
মেয়র আতিকুল ঢাকা উত্তরের বাসিন্দাদের অনুরোধ করে বলেন, ‘বর্জ্য অপসারণে আমরা আপনাদের যে ৯ লাখ বায়োডিগ্রেডেবল (পরিবেশ-বান্ধব) পলিব্যাগ বিতরণ করব তাতে কোরবানির বর্জ্য ভরে রেখে দেবেন। সেগুলো আমরা সরিয়ে নেব। তবে এসব পলিব্যাগে আপনারা যেন মাংস ঢুকিয়ে ফ্রিজে না রাখেন। এগুলো বর্জ্য অপসারণের জন্য আমরা তৈরি করেছি।’
ঢাকা দক্ষিণ সিটি বলছে, বর্জ্য অপসারণ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তারাও গঠন করেছে তদারকি টিম। মাঠে থাকবে তাদের প্রায় ৯ হাজার পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও ৩৫৭টি যান-যন্ত্রপাতি। জীবাণু ধবংসের জন্য তাদের সব ওয়ার্ডের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১ হাজার ৩০০ ড্রাম ব্লিচিং পাউডার। আর বর্জ্য অপসারণের জন্য বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে ১ লাখ ৩০ হাজার চটের ব্যাগ।
সম্প্রতি কোরবানির ঈদের বর্জ্য অপসারণ বিষয়ে দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, আমাদের সব প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইনশাআল্লাহ গতবারের মতো এবারও আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ শেষ করতে পারব।’
মেয়র দক্ষিণ সিটির বাসিন্দাদের দিনের মধ্যে কোরবানি সম্পন্ন করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকাবাসীর কাছে বিনীত নিবেদন করব যেন দু’দিনের মধ্যেই পশু কোরবানির কার্যক্রমটা সম্পন্ন করা হয়। আমাদের দীর্ঘদিনের একটি সংস্কৃতি যে, তৃতীয় দিনেও কোরবানি দেয়া হয়। আমরা যেন সেখান থেকে একটু সরে আসি।
‘আমরা যেন সব কোরবানি প্রথম এবং দ্বিতীয় দিনের মধ্যেই সম্পন্ন করি। কারণ একটানা ৭২ ঘণ্টা (ঈদের রাত থেকে পশুর হাটের বর্জ্য অপসারণ শুরু করা হয়) কাজ করার পর আমাদের জনবলকে বিশ্রাম দেয়া বাঞ্ছনীয়। মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও আমরা এই নিবেদনটা নগরবাসীর কাছে রাখছি।’