ঈদে জঙ্গি হামলার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক। একই সঙ্গে নিরাপত্তার স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহের আগত মুসল্লিদের জায়নামাজ ও ছাতা ছাড়া কিছু না আনার অনুরোধ করেছেন তিনি।
বুধবার সকালে রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় ঈদগাহে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে। এখানে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গসহ ৩০-৩৫ হাজার লোক নামাজ পড়বেন। ঈদগাহ যারা আসবেন, আপনারা শুধুমাত্র জায়নামাজ আর ছাতা নিয়ে আসতে পারেন। অন্য কোনো লাগেজ বা ব্যাগ না নিয়ে আসার জন্য অনুরোধ করছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রত্যেককে চেকপোস্টে তল্লাশি শেষে ঈদগাহে প্রবেশ করতে দেয়া হবে। গাড়ি কোথায় থামবে সে বিষয়েও নির্দেশনা রয়েছে। গাড়ি থেকে নেমে অনেকদূর হেঁটে আসতে হবে। তাই বৃষ্টির দিনে সকলের সঙ্গে ছাতা থাকা বাঞ্ছনীয়। আবহাওয়ার যদি আরও বড় দুর্যোগ না হয় তাহলে মুসল্লিরা এ অবস্থায় নির্বিঘ্নে জাতীয় ঈদগাহে নামাজ আদায় করতে পারবেন।’
ঈদের সময়টাতে জাতীয় ঈদগাহসহ গোটা রাজধানীজুড়ে থাকবে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা। তবে জঙ্গী হামলার কোন শংকা নেই বলে জানান তিনি।
কমিশনার বলেন, ‘এবারে ঈদ উদযাপন নির্বিঘ্ন করতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেয়া হয়েছে। ঈদে জঙ্গি হামলার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তবে অতীত ইতিহাসের বিষয়টি মাথায় রেখে পুলিশের সকল ইউনিট তৎপর রয়েছে।
‘ডিএমপি প্রত্যেকটা ঈদের জামাতে নিরাপত্তায় নিয়োয়োজিত থাকে। বিভিন্ন ইউনিটের পোশাকধারী সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাক পরিহিত সদস্যরাও মোতায়েন থাকবে। কমিউনিটি পুলিশ ও বিট পুলিশিংও স্থানীয়ভাবে নিরাপত্তার বিষয়ে তৎপর থাকবে। এ ছাড়া অন্য কোনো হুমকি থাকলে সিটিটিসি প্রস্তুত থাকবে।’
জাতীয় ঈদগাহে ডিএমপির পক্ষ থেকে তিন স্তরের নিরাপত্তা থাকবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ডগ স্কোয়াডেরর মাধ্যমে সুইপিং করা হয়েছে। র্যাবও ফোর্স নিয়োগ করবে। সকলের সঙ্গে সমন্বয় করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সাজানো হয়েছে।’
ফাঁকা ঢাকার নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গত ঈদে নিরাপত্তা ব্যবস্থার কারণে যারা বাসা খালি রেখে চলে গেছেন সেখানেও বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। এবারও আশা করছি সে অবস্থা বজায় থাকবে। ঢাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা থাকবে। স্থানীয় সিকিউরিটি গার্ডের সঙ্গে যোগাগাযোগ থাকবে। কোনো তথ্য আমাদের জানালে তাৎক্ষণিক পুলিশ অ্যাটেন্ড (উপস্থিত হবে) করবে। তারপরও যারা গ্রামে যাচ্ছেন, মূল্যবান সম্পত্তি খালি বাসায় না রেখে ঘনিষ্টদের বাসায় অথবা ব্যংকে রেখে যান। যদিও পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে, তাও ফাঁকা বাসায় মূল্যবান সামগ্রী থাকলে ঝুঁকি থেকেই যায়।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কসাইয়ের ছদ্মবেশে রেকি করে- এমন অপরাধের বিষয়ে কারো কাছে তথ্য থাকলে পুলিশকে জানাবেন। কারো গতিবিধি সন্দেহজনক মনে হলে পুলিশকে জানিয়ে দিন। যে কোনো তথ্য পেলে আমরা ব্যবস্থা নিতে পারব।’
কমিশনার বলেন, ‘ডিএমপির ৩২ হাজার পুলিশ সদস্যের মধ্যে ৩-৪ হাজারকে হয়ত ছুটি দিব। বাকিরা ঢাকায় দায়িত্ব পালন করবেন, তাদের ঈদ নেই। তারা নগরবাসীর সেবায় ঢাকায় দায়িত্ব পালন করবেন। আশা করি, নিরাপদে ঈদ উদযাপিত হবে।’