বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কোরবানি ঘিরে মৌসুমি পণ্যের কদর

  •    
  • ২৭ জুন, ২০২৩ ২২:৩৩

কোরবানির পশুর মাংস কাটাকুটির কাজে প্রয়োজনীয় জিনিসের অন্যতম হলো গাছের গুঁড়ি বা খটিয়া। আরও রয়েছে বাঁশ ও প্লাস্টিকের তৈরি লাই-ঝুড়ি বা খাড়েং, বাঁশের তৈরি মাদুর। চট্টগ্রাম নগরীতে এসব জিনিস বিক্রি করছেন ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা।

পবিত্র ঈদুল আজহার বাকি আর একদিন। মুসলিমদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বড় উৎসবের অংশ হিসেবে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে এদিন পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। আর কোরবানি দেয়া পশুর মাংস কাটাকুটির জন্য প্রয়োজন হয় নানা জিনিসপত্রের।

এসব জিনিসের অন্যতম হলো গাছের গুঁড়ি বা খটিয়া। বিশেষ কয়েকটি গাছের গোড়ার দিকের ৫ থেকে ১০ ইঞ্চি উচ্চতার গোলাকার এই টুকরোগুলো অঞ্চলভেদে খাইট্টা, কাইটে, শপার ও হাইজ্যা নামেও পরিচিত।

এর বাইরে মাংস কাটাকুটির কাজে বাঁশ ও প্লাস্টিকের তৈরি লাই-ঝুড়ি বা খাড়েং, বাঁশের তৈরি মাদুর ব্যবহার।

কেনা পশুর খাদ্য হিসেবে খড়-ঘাস এবং ভুষিরও প্রচুর চাহিদা তৈরি হয়। তাই কোরবানির ঈদকে ঘিরে অনেকেই এসব পণ্য নিয়ে মৌসুমি ব্যবসায় নামেন।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আতুরার ডিপু, দেওয়ান হাট, চকবাজার, বহাদ্দারহাট, নিউমার্কেট, কাঠঘর, বাকলিয়া, আগ্রাবাদসহ বেশকিছু এলাকায় বিক্রি হচ্ছে এসব মৌসুমি পণ্য।

পণ্যগুলোর মধ্যে খটিয়া তৈরি হয় বিশেষ কিছু গাছ দিয়ে। সবচেয়ে বেশি খাটিয়া হয় তেঁতুল গাছ দিয়ে। তেঁতুল গাছের খটিয়া বিক্রি হচ্ছে দেড়শ’ থেকে তিনশ’ টাকায়। এর বাইরে কাঁঠাল গাছ এবং গোদা গাছ দিয়েও তৈরি হয় এই মৌসুমি পণ্য। তবে গোদা গাছ তুলনামূলক বেশি শক্ত হওয়ায় এই গাছের খটিয়ার দামও তুলনামূলক বেশি। চট্টগ্রামে গোদা গাছের খাটিয়া বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকায়। তবে এ ধরনের খটিয়া সাধারণত কসাইরা কিনে থাকেন।

কোরবানির মাংস কাটাকুটির আরেকটি অত্যাবশ্যকীয় পণ্য বাঁশের তৈরি মাদুর। পশু জবাইয়ের পর এই মাদুরেই মাংস রাখা হয়। চট্টগ্রামের মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এসব মাদুর বিক্রি করছেন আকারভেদে দুশ’ থেকে এক হাজার টাকায়।

কোরবানির পশুকে খাওয়ানো ও মাদুরের নিচে দেয়ার জন্য প্রয়োজন হয় খড়ের। নগরে দুই থেকে চার কেজি ওজনের প্রতি আঁটি খড় বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকায়। এর বাইরে জবাই করা পশুর মাংস বাইরে থেকে বাসায় নিতে প্রয়োজন হয় লাই বা খাড়ংয়ের। বাঁশ ও প্লাস্টিকের তৈরি এসব পণ্য বিক্রি হচ্ছে দুশ’ থেকে সাড়ে তিনশ’ টাকায়।

নগরীর দেওয়ানহাট এলাকার এসব পণ্যের মৌসুমি ব্যবসায়ী মো. রাজু বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকার করাতকল মালিকদের কাছ থেকে খাটিয়া সংগ্রহ করি। এবার আমরা ৫০০টি খটিয়া এনেছি। এর মধ্যে দুই শতাধিক বিক্রি হয়ে গেছে। আমরা পাইকারিতে একশ’ থেকে আড়াইশ’ টাকায় এসব খটিয়া সংগ্রহ করি। তাছাড়া পরিবহন খরচ আছে। এসব খটিয়া আকার অনুযায়ী বিভিন্ন দামে বিক্রি করি। এর বাইরে বাঁশের তৈরি পণ্যগুলো অগ্রিম অর্ডার করে পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করি।’

নির্দিষ্ট কয়েকটি গাছ দিয়ে খটিয়া তৈরির কারণ হিসেবে নগরীর দেওয়ানহাট এলাকার মৌসুমি ব্যবসায়ী মো. শফিউল আলম বলেন, ‘সাধারণত শক্ত গাছ দিয়ে এসব খটিয়া তৈরি হয়। কারণ তুলনামূলক নরম হলে দা বা ধামার আঘাতে গাছের গুঁড়ি লেগে মাংস নোংরা হয়ে যায়। কিন্তু তেঁতুল, কাঁঠাল বা গোদা গাছ তুলনামূলক শক্ত। দা বা ধামার কোপে এসব গাছের গুঁড়ি ওঠে না। তাই মাংস পরিষ্কার থাকে।’

নগরীর দেওয়ানহাট এলাকায় গাছের খটিয়া, লাই ও খড় কিনতে আসা আশকারাবাদ এলাকার শরীফ উদ্দিন বলেন, ‘এসব পণ্য প্রতি কোরবানির ঈদে কিনতে হয়। কিন্তু খটিয়া দুই বছর অন্তর কিনি। একটা দিয়ে দুই বছর চলে যায়। তবে খড়, লাই, মাদুর এসব প্রতিবছরই কিনতে হয়।’

এ বিভাগের আরো খবর