ময়মনসিংহে বড় গাড়ির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মহাসড়কগুলোতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তিনচাকার বিভিন্ন যানবাহন। এতে মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। ঈদকে সামনে রেখে এসব যানবাহনের সংখ্যাও বেড়েছে। যাত্রীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে দুই থেকে তিনগুণ বেশি ভাড়া।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে নগরীর পাটগুদাম সেতু এলাকা ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বাইপাস মোড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দ্রুতগতিতে চলছে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, সিএনজি অটোরিকশা ও মাহিন্দ্র। বাসের পাশাপাশি এসব গাড়িতেও যাত্রীর ভিড়। তবে তিন চাকার গাড়িগুলোর ভাড়া নিয়ে চালকদের ওপর ক্ষুব্ধ যাত্রীরা।
যাত্রীরা জানান, তিন চাকার নিষিদ্ধ এসব যান চলছে ময়মনসিংহ-ঢাকা, ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ, ময়মনসিংহ-শেরপুরসহ সবক’টি সড়ক-মহাসড়কে। অনেক যাত্রী এসব যানবাহনে করে গন্তব্যে ছুঁটছেন। ঈদের দোহাই দিয়ে দুই থেকে তিনগুণ ভাড়া হাতিয়ে নিচ্ছেন চালকরা।
নগরীর পাটগুদাম সেতু এলাকায় কথা হয় আব্দুল হাই নামে মধ্যবয়সী এক যাত্রীর সঙ্গে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়ি তারাকান্দায় যাব। আগে সিএনজিচালিত অটোরিকশা দিয়ে পঞ্চাশ টাকায় যেতে পারলেও এখন ঈদ উপলক্ষে ১৫০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। এসব চালকরা একজোট হয়ে আমাদের কাছ থেকে অনেক বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।’
পাটগুদাম সেতু এলাকা থেকে অটোরিকশা দিয়ে বাইপাস মোড়ে আসলে কথা হয় ফরহাদ মিয়া নামের আরেকজন যাত্রীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পাটগুদাম থেকে এ পর্যন্ত ভাড়া ১০ টাকা। অথচ এখন আসলাম ৩০ টাকা দিয়ে। আবার কয়েকজন চালক অন্য যাত্রীদের কাছ থেকে ৪০ টাকাও নিয়েছে। ঈদ উপলক্ষে আমাদের সঙ্গে নৈরাজ্য শুরু করেছে চালকরা।’
এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি কামনা করেছেন তিনি।
সিএনজি অটোরিকশাচালক আসলাম মিয়া বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে অন্য চালকরা বাড়তি ভাড়া নেয়ায় আমিও নিচ্ছি৷ সবাই আগের রেটে গাড়ি চালালে আমিও চালাতে বাধ্য। তবে ঈদের আগে বিভিন্ন সড়কে পুলিশ ও বিভিন্ন সংগঠনের নামে বেশি চাঁদা দেয়া লাগে। এজন্য আমরাও যাত্রীদের কাছ থেকে বেশি ভাড়া নিচ্ছি।
বাইপাস মোড়ে অটোরিকশাচালক সেলিম মিয়া বলেন, ‘মাঝেমধ্যেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে সময় বেশি লাগছে। ফলে ১০ টাকার ভাড়া কখনো কখনো ৩০-৪০ টাকা নিতে আমার বাধ্য হচ্ছি।’
এ বিষয়ে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহম্মদ ভূঞা বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশও তৎপর রয়েছে। অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার প্রমাণ মিললে চালকদের আইনের আওতায় আনা হবে।’
এ ছাড়া যানজট নিরসনে জেলা ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা দিনরাত কাজ করছেন জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।