বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভোলায় আ.লীগের দুই গ্রুপের দফায় দফায় সংঘর্ষ

  • প্রতিনিধি, ভোলা   
  • ২৬ জুন, ২০২৩ ২৩:৩১

রোববার বিকেলের দিকে তজুমদ্দিনের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের বাড়িতে ৫০০-৬০০ লোকজন অস্ত্র-স্বস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ভোলায় আগামী সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ২০টি বসত ঘর, ১৫টি দোকান ও চারটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

রোববার বিকেল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত ভোলার লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়দের বরাতে সূত্র জানায়, ২৭ জুন লালমোহন উপজেলার ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের আব্দুল হান্নান মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল বিবিএস ও নাহী গ্রুপের চেয়ারম্যান ভোলা-৩ আসনের আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদারের। অনুষ্ঠানটি কেন্দ্র করে কয়েকদিন ধরেই আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ উত্তেজনা রোববার বিকেলে সংঘর্ষের রূপ নেয়।

রোববার বিকেলের দিকে তজুমদ্দিনের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের বাড়িতে ৫০০-৬০০ লোকজন অস্ত্র-স্বস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় চাচড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ১৫টি দোকান ও ৮টি ঘর ভাংচুর করা হয়। এসময় একজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

ঘটনার পর রাত ৮টার দিকে পার্শ্ববর্তী লালমোহন উপজেলার ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদারের গ্রামের বাড়িতে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। এ সময় হামলাকারীরা বোমা ফাটিয়ে দুইটি বাড়ির ১২টি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালায়; সেসময় ভাংচুর করা হয় চারটি মোটরসাইকেলও।

হামলাকারীদের ভয়ে বাড়ির লোকজন অনত্র পালিয়ে গেলে ঘরের বেড়া, দরজা-জানালা কুপিয়ে তছনছ করা হয়। এমনকি ঘরের আসবাবপত্র ও মালামাল ভাংচুর ও লুটপাট চালায় হামলাকারীরা।

এ ঘটনার পর দুই ইউনিয়নে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

তজুমদ্দিনের চাচড়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়াজুল ইসলাম হান্নান অভিযোগ করে বলেন, ‘রোববার বিকেলে চাচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহেরের নেতৃত্বে লালমোহন ও তজুমদ্দিন উপজেলার পাঁচ শতাধিক আওয়ামী লীগের লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়। এ সময় তার বসতঘরসহ স্থানীয় ৭-৮টি ঘর ও ১৫টি দোকান ভাংচুর করা হয়।’

পুলিশ ঘটনাস্থল থাকলেও হামলাকারীদের কিছুই বলেনি বলে অভিযোগ তার।

ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের সেরাজল হক হাওলাদার বাড়ির বাসিন্দা মো. ফখরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, ‘পারিবারিকভাবে আমরা আওয়ামী লীগ করে আসছি। আমার চাচাতো ভাই ইঞ্জিনিয়ার আবু নোমান হাওলাদার আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চাওয়ায় আমরা তার পক্ষে কাজ করছি। এ ঘটনার সূত্র ধরে স্থানীয় এমপির নির্দেশে আমাদের নামে বিভিন্ন মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে বাড়ির কোনো পুরুষ রাতে বাড়িতে থাকতে পারছেন না। এ অবস্থায় রোববার রাতে তজুমদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক দেওয়ান, চাচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহেরসহ লালমোহন-তজুমদ্দিনের প্রায় ৫০০ শতাধিক আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা অস্ত্র-স্বস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। হামলার খবর পেয়ে বাড়ির নারীরা ও শিশুরা যে যার মতো বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে হামলাকারীরা ঘর-বাড়ি কুপিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট চালায়। হামলার সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও হামলাকারীদের কিছুই বলেনি। এ ঘটনায় আমরা আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছি।

তজুমদ্দিন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক দেওয়ান জানান, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তবে চাচড়া ইউনিয়নের ঘটনাটি শুনেছেন। সেখানে সাবেক চেয়ারম্যান হান্নান একজন ইউপি সদস্যকে তার বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মরধর করে গুরুতর আহত করে। এছাড়াও ওই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও মারধর করেছে। এ ঘটনা নিয়ে সেখানে সংঘর্ষ হয়েছে।

তবে লালমোহনের ধলিগৌরনগর ইউনিয়নের ঘটনা তার জানা নেই বলে জানান তিনি।

চাচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের জানান, হান্নান চেয়ারম্যান গত নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেছেন। সে থেকে সে ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আছেন। সেই সূত্র ধরে রোববার বিকেলে তার বাড়ির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় এক ইউপি সদস্যকে মারধর করে আহত করেন। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও গুলি করেছেন। এতে যুবলীগ নেতা নাজিম গুলিবিদ্ধসহ তাদের পাঁচজন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় তারা থানায় একটি মামলা করেছেন। তবে তারা কারো ওপর হামলা করেননি।

তজুমদ্দিন থানার ওসি মো. মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, হান্নান চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর করা হয়েছে। তবে পুলিশের উপস্থিতিতে কোনো হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি। পুলিশ হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে নিয়ন্ত্রণ করে।

তিনি জানান, এ ঘটনায় আবু তাহের চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে একটি মারামারির মামলা করেছে। ওই মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে হান্নান চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে থেকে এখনো লিখিত কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

এ বিভাগের আরো খবর