মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। ঈদকে সামনে রেখে প্রতি বছরই কেনাকাটা করতে হাজার হাজার বাংলাদেশি ছোটেন প্রতিবেশী দেশ ভারতে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়; ঈদের আগে বেনাপোল বন্দরে ভিড় বাড়তে শুরু করেছে।
দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট বেনাপোল থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের প্রধান নগরী কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো হওয়ায় অল্প খরচে ও স্বল্প সময়ে কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন জায়গায় অনায়াসে যাওয়া যায়।
বন্দর সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেছে। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকে এ সংখ্যা বেড়ে এখন প্রায় ৭ হাজারে পৌঁছেছে। আবার অনেকেই ঈদের ছুটি কাটাতে ভারতের বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে যান। এ কারণে ঈদের ছুটিতে এ সংখ্যা ৯-১০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র আরও জানায়, গত ১৯ জুন থেকে ২৫ জুন পর্যন্ত এক সপ্তাহে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী ভারতে যাতায়াত করেছেন। এর মাধ্যমে রাজস্ব আয় হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাওয়া মোজাফফার রহমান বলেন, ‘পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করতে কলকাতা যাচ্ছি। ঢাকার চেয়ে কলকাতায় যাতায়াত সহজ ও দামও নাগালের মধ্যে হওয়ায় মাঝে মধ্যেই কলকাতায় যাওয়া হয়।’
কলকাতা থেকে ফিরে আসা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদ সামনে রেখে দু’দিন আগে পোশাক কিনতে কলকাতায় গিয়েছিলাম। যাওয়ার সময় বেনাপোলে তেমন সমস্যা না হলেও ওপারে ভিড়ের কারণে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। তারপরও দেশের তুলনায় দাম কম হওয়ায় ভারত থেকেই কেনাকাটা করি।’
ঈদের এ মৌসুমে যাত্রীদের যাতে দুর্ভোগে না পড়তে হয় সেজন্য বেনাপোল চেকপোস্টে পাসপোর্টের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার প্রস্তুতিও রেখেছেন সংশ্লিষ্টরা।
ভ্রমণকারীরা জানান, দেশের পাসপোর্টের কাজ তাড়াতাড়ি সম্পন্ন হলেও দুর্ভোগে পড়তে হয় ভারতীয় চেকপোস্টে গিয়ে। সেখানে দীর্ঘ লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। পেট্রাপোল ইমিগ্রেশনে কাজে ধীরগতির কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি আহসান হাবীব বলেন, ‘ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এখন গড়ে ৭ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী প্রতিদিন বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত যাতায়াত করছে। আগামী এক সপ্তাহে এ সংখ্যা ৯ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে। কারণ সাধারণত ঈদের ছুটিতে ভ্রমণ-পিপাসু মানুষের ভারত ভ্রমণে যাওয়ার আগ্রহ থাকে। এ জন্য ওই সময়ে চেকপোস্টে বাড়তি চাপ থাকে।’
তবে যাত্রীরা যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ইমিগ্রেশনের কাজ শেষ করতে পারেন, সেজন্য ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে ডেস্কের সংখ্যা দ্বিগুণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘আগে যাওয়া-আসার প্রক্রিয়া সম্পন্নের জন্য আগে ১৬টি ডেস্ক ছিল। এখন ৩২টিতে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়া গরমে যাত্রীরা যাতে কষ্ট না পান সে জন্য ভবনের মধ্যে পর্যাপ্ত ফ্যানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
পাসপোর্ট যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও জানান ওসি আহসান হাবীব।