কোক স্টুডিও বাংলার সম্প্রতি প্রচারিত ‘কথা কইয়ো না’ শিরোনামের গানের ভিডিওতে পাতা দিয়ে বাঁশি বাজাতে দেখা যায় দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ মডেল স্কুলের সংগীত, অংকন ও হাতের লেখার শিক্ষক গোলাম রব্বানীকে। এ নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ উপজেলার বাসিন্দারা।
স্কুলশিক্ষক গোলাম রব্বানীর ৩০ বছরের সাধনার ফল এই পাতার বাঁশির সুর। এর আগেও তিনি ইত্যাদিসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানে পাতার বাঁশি বাজিয়েছেন, তবে কোক স্টুডিওর গানের পর তার পরিচিতিতে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা।
শিক্ষার্থী, স্থানীয় ও স্কুলশিক্ষকদের প্রতিক্রিয়া
বোচাগঞ্জ মডেল স্কুলের ছাত্র মাহফুজ ইসলাম বলে, ‘আমাদের স্কুলের প্রিয় গোলাম রব্বানী স্যার পাতা দিয়ে বাঁশি বাজান। সম্প্রতি স্যার কোক স্টুডিও বাংলাতে বাঁশি দিয়ে সুর দিয়েছেন।
‘এটা দেখে আমাদের খুব ভালো লাগছে। আমরাও স্যারের কাছে পাতা দিয়ে বাঁশি বাজানো শিখতে চাই।’
শিক্ষার্থী শান্তি সাহা নেহা বলে, ‘স্যারের কাছে আমরা হাতের লেখা ও ড্রইং শিখি। এর পাশাপাশি মাঝেমধ্যে স্যার আমাদের পাতার বাঁশি শেখান। স্যার আমাদের স্নেহ করেন। তিনি আমার প্রিয় শিক্ষকদের মধ্যে একজন।
‘পাতার বাঁশি অনেকেই বাজান, কিন্তু স্যারের মতো কেউ বাজাতে পারেন না। পাতা দিয়ে বাঁশি বাজিয়ে সুর দেয়া গানটি শুনেছি। আমাদের অনেক ভালো লাগছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা সুজন ইসলাম বলেন, ‘আমি যখন ছোট, তখন থেকে স্যারকে পাতা দিয়ে বাঁশি বাজাতে দেখেছি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্যার পাতা দিয়ে বাঁশি বাজাতেন। স্যারের পাতার বাঁশি শুনতে খুবই ভালো লাগত। স্যার দীর্ঘদিন ধরে পরিশ্রম করে এই উচ্চতায় পৌঁছেছেন।
‘স্যার কোক স্টুডিও বাংলার একটি গানে পাতা দিয়ে বাঁশি বাজিয়ে সুর দিয়েছেন। এটা আমাদের খুব ভালো লাগছে। স্যারের কারণে আমরা গর্ববোধ করছি।’
স্কুলের শিক্ষক সাদিকা বেগম বলেন, ‘রব্বানী ভাই আমাদের স্কুলের গর্ব। ছোটবেলা থেকে ভাইকে আমি চিনি। তার পাতার বাঁশি আমি ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি।
‘পাতার বাঁশি শুনতে অনেক ভালো লাগে। আমরাও চাই আমাদের সন্তানরা যেন পাতার বাঁশি বাজানো শেখে।’
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘রব্বানী ভাই আমাদের স্কুলের শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের হাতের লেখার পাশাপাশি পাতার বাঁশি শেখান। এই স্কুলে তিনি অনেকদিন ধরে শিক্ষকতা করছেন।
‘তিনি নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন। তিনি একটি গানে পাতার বাঁশি দিয়ে সুর দিয়েছেন। তার কারণে আমরা গর্ববোধ করছি।’
শিক্ষক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘সংগীতের পাশাপাশি আমি হাতের লেখা, চিত্রাংকন করি। ছোটবেলা থেকে আমরা ভাই ও বোনেরা হাতের লেখা, সংগীত, আর্ট করা শিখেছি। আমার একটা সুন্দর হাতের লেখার স্কুল আছে। সেখানে অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে।
‘আমি যখন অংকন করতাম, সেই অংকন করা ছবিটা আমার কাছে থাকত না। কারও ভালো লাগলে সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যেত। ১৯৮৮ সাল থেকে আমি সংগীত ও চিত্রাংকন চর্চার সঙ্গে যুক্ত। গান ও বাঁশি নিয়ে ভালো কিছু করার চেষ্টা করছি।’