বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদেশ যাওয়ার টাকা জোগাতে হত্যা, সিগারেটের সূত্র ধরে গ্রেপ্তার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৫ জুন, ২০২৩ ১৩:২৯

নিহতের ছয় মাস আগে বিমল অসুস্থ হন। তখন থেকে তিনি ধুমপান ছেড়ে দেন। কিন্তু ঘটনার দিন ভুক্তভোগীর বাসায় দুটি সিগারেটের উচ্ছিষ্টাংশ পাওয়া যায়। এ সিগারেট এল কোথা থেকে, ধুমপান-ই-বা করলেন কে!

ঢাকার আশুলিয়ায় বিমল চন্দ্র হত্যা মামলায় মো. হাফেজ নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

হাফেজের ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির বরাতে পিবিআই জানায়, বিদেশ যাওয়ার টাকা জোগাতে চুরি শুরু করেন হাফেজ। পরপর দুটি রিকশা চুরি করে বিক্রিও করেন। সর্বশেষ বিমল চন্দ্রের বাসায় চুরি করতে যান হাফেজ। সেখানে বিমল নিহত হন। এ ঘটনায় হাফেজের সম্পৃক্ততা দুটি সিগারেটের উচ্ছিষ্টাংশের সূত্র ধরে খুঁজে পায় পিবিআই।

রোববার পিবিআইয়ের সদরদপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা জেলার ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা।

এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে হাফেজকে সাভারের আশুলিয়ার জিরানী বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পিবিআই জানায়, বিমল চন্দ্র আশুলিয়ার জামগড়া মনির মার্কেট এলাকায় ভাড়া থাকতেন। অসুস্থ হওয়ায় তিনি বাসায় থাকতেন এবং স্ত্রী এবং মেয়ে পোশাক কারখানায় কাজ করেন।

গত ১৬ এপ্রিল প্রতিদিনের মতো বিমলের স্ত্রী এবং মেয়ে কাজে যান। বিকেলে মেয়ে পূর্ণিমা রানী বাসায় ফিরে বাবাকে রক্তাক্ত অবস্থায় মুখের ভেতরে কাপড় কাটার কাঁচি ঢুকানো অবস্থায় দেখতে পান।

ওই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী পারুল অজ্ঞাতনামা আসামিদের নামে আশুলিয়া থানায় মামলা করেন।

আশুলিয়া পুলিশ ১৭ এপ্রিল থেকে ৪ জুন পর্যন্ত মামলাটি তদন্ত করে। গত ৪ জুন পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে ঢাকা জেলার পিবিআইকে মামলাটি হস্তান্তর করা হয়।

পরিবার জানায়, নিহতের ছয় মাস আগে বিমল অসুস্থ হন। তখন থেকে তিনি ধুমপান ছেড়ে দেন। কিন্তু ঘটনার দিন ভুক্তভোগীর বাসায় দুটি সিগারেটের উচ্ছিষ্টাংশ পাওয়া যায়।

এর সূত্র ধরে তদন্ত এগুতে হতে থাকে। বেশ কয়েকজনকে সন্দেহের তালিকায় আনা হয়। এর মধ্যে মো. হাফেজকে সন্দেহের তালিকায় এক নম্বরে রেখে তার বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া শুরু করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা জানান, তদন্তের এক পর্যায়ে পিবিআই তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে হাফেজকে আশুলিয়ার জিরানী বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হাফেজের বরাতে পুলিশ জানায়, ভুক্তভোগী ও হাফেজের স্ত্রী একই কারখানায় চাকরি করেন। এ সুবাদে এবং একই এলাকায় পাশাপাশি বসবাস করায় হাফেজ মাঝেমধ্যেই ভুক্তভোগীর বাসায় যাতায়াত করতেন। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৭টারি দিকে হাফেজ ভুক্তভোগীর বাসায় যান। হাফেজ ও বিমল চন্দ্র একসঙ্গে টিভি দেখেন এবং খাওয়া-দাওয়া করেন। পরে সিগারেট আনতে বিমলকে বাসার নিচে দোকানে পাঠান হাফেজ।

পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘ওই সময় হাফেজ নিহতের স্ত্রীর অলংকার, টাকা খুঁজতে থাকেন। বিমল সিগারেট নিয়ে এসে চুরির বিষয়টি দেখে ফেলায় হাফেজ টেবিলে থাকা কাপড় কাটার কাঁচি দিয়ে প্রথমে তার গলার ডান পাশে আঘাত করেন।’

‘পরে বিমলের মুখে কাঁচি ঢুকিয়ে হত্যা করে বাসা থেকে একজোড়া স্বর্ণের শাখা, দুই জোড়া কানের দুল এবং দুই জোড়া চুড়িসহ আলমারিতে থাকা ৯ হাজার ৫২০ টাকা নিয়ে পালিয়ে যান।’

গ্রেপ্তারের পরের দিন হাফেজকে আদালতে পাঠানো হলে তিনি ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মো. কুদরত-ই-খুদা বলেন, ‘হাফেজ বিদেশে যাওয়ার জন্য টাকা জোগাড় করছিলেন। এর আগে দুটি অটোরিকশা চুরি করে বিক্রি করেন।’

চোরাই স্বর্ণালংকার বিক্রিতে সাহায্যকারীদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।

এ বিভাগের আরো খবর