পদ্মা সেতুতে শর্তসাপেক্ষ মোটরসাইকেল পারাপার হচ্ছে দুই মাসের বেশি সময় ধরে। এই সময়ের মধ্যে প্রতিদিন গড়ে এ সেতুতে পাড়ি দিয়েছে সাড়ে চার হাজারের বেশি দুই চাকার এই যান।
গত ২০ এপিল থেকে ২৩ জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে সেতুতে ২ লাখ ৯৩ হাজার ২৮২টি মোটরসাইকেল পারাপারে ২ কোটি ৯৩ লাখ ২৮ হাজার ২০০ টাকার মতো টোল আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
যানবাহন চলাচল শুরুর পর দিনই বিশৃঙ্খলা কারণে পদ্মা সেতুতে বন্ধ হয় মোটরসাইকেল, তবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আর চালকদের সচেতনতায় সেতুতে এখন নেই তেমন কোনো বিশৃঙ্খলা।
সরেজমিনে দেখা যায়, পদ্মা সেতুর উত্তর থানা মোড় থেকে মোটসাইকেল চলার সড়ক হয়ে নির্ধারিত লেন হয়ে সেতুতে উঠছে মোটরসাইকেল। গত ২০ এপিল মোটরসাইকল চলার জন্য সেতু খুলে দেয়ার পর সেতু আলাদা করে লেন করা হয় রশি দিয়ে। বর্তমানে রশি দিয়ে পৃথক লেন না থাকলেও নির্ধারিত লেন দিয়ে সেতু পারি দিচ্ছে মোটসাইকল।
পদ্মা সেতুর উত্তর থানার মোড় থেকেই চালকদের শৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ। স্বপ্নের সেতু হয়ে সহজে ফিরতে পারায় খুশি মোটরসাইকেল আরোহীরা ।
ঢাকা থেকে শরীয়তপুরগামী মোটরসাইকেল আরাহী জীবন সরকার বলন, ঢাকায় বড় ভাইয়ের ব্যবসার সাথে সহযোগী হিসেবে কাজ করি। বিভিন্ন প্রয়োজনে সপ্তাহে ২-১ বার বাড়িতে যেতে হয়। সেতু দিয়ে সহজেই যখন তখন এখন যেতে পারি।
তিনি বলেন, চেষ্টা করি নিয়ম মেনেই নির্ধারিত গতিতে গাড়ি চালানোর জন্য। যেন আর কখনও সেতুতে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ না হয়।
একই কথা জানান আরেক আরাহী মো. আশরাফ। তিনি বলন, মোটরসাইকেল চলতে দেয়ায় এখন নিয়মিত ঢাকায় যাতায়াত করি। ছোট প্রয়োজনেও যাতায়াত করি, কারণ এখন ভোগান্তি নেই । আর মোটরসাইকেল চলায় সাশ্রয়ী, যাতায়াতও সহজ হয়েছে।
পদ্মা সেতুতে দায়িত্বে থাকা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেতুতে স্পিডগান দিয়ে গতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। বর্তমান ৮০-৯০ ভাগ চালক পুরোপুরি মেনে চলছেন নিয়ম, নির্ধারিত গতি রাখছেন অধিকাংশ চালক।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশর ইনচার্জ বজলুর রহমান বলেন, শৃঙ্খলা রক্ষায় আমাদের সার্বক্ষণিক তৎপরতা থাকছে। বিশৃঙ্খলার পরিমাণ কমে এসছে। এরপরও আমাদের অভিযান চলছে।
তিনি বলেন, গত ২১ এপ্রিল থেকে ২২ জুন পর্যন্ত দুই মাসে নিয়ম অমান্য করায় ২৬৫ জন মোটরসাইকেল চালককে জরিমানা করা হয়ছ। নির্ধারিত লেন অতিক্রম ও অতিরিক্ত গতিতে মাটরসাইকল চালানোয় তাদের জরিমানা করা হয়েছে। অচিরেই শতভাগ নিয়ম মানার জন্য আমাদের কার্যক্রম চলছে।
গত বছরের ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয় পদ্মা সেতু। এর পরদিন চালু হয় যান চলাচল। বিশৃঙ্খলার কারণে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল শুরুর পর দিনই বন্ধ করে দেয়া হয় মোটরসাইকেল। ১০ মাস বন্ধ থাকার পর শর্তসাপেক্ষে দুই চাকার যানের জন্য গত ২০ এপ্রিল খুলে দেয়া হয় সেতুদ্বার।