টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দুই গ্রুপে হাতাহাতি, পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার বিকেলে মির্জাপুরের শহীদ ভবানী প্রসাদ সাহা সরকারি কলেজ মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভর অনুসারীদের সঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ ও সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্তের অনুসারীদের এই হাতাহাতি ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
এতে সম্মেলনের কার্যক্রম কিছু সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। পরে জেলা ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা সেতাব মাহমুদ বলেন, ‘সম্মেলন চলাকালে হল রুমের ভিড় ঠেলে এক কর্মী বার বার আসা-যাওয়া করছিল। তাকে নিষেধ করায় সে আমাদের ওপর চড়াও হয়ে হাতাহাতি শুরু করে। পরে তার পক্ষ নিয়ে অন্য কয়েকজন এসে মারামারি শুরু করলে এই বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত অভিযোগ করে বলেন, ‘মির্জাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে একটি রেওয়াজ রয়েছে যে, মির্জাপুর উপজেলার নেতারাই স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্ব নির্ধারণ করে থাকেন। কোনো কারণ ছাড়াই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে সেই রেওয়াজ ভঙ্গের জন্যই এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন নম্বরে বার বার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জানা গেছে, দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় পর শনিবার মির্জাপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাজী আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আকন্দের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য খান আহমেদ শুভ।
অন্য অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মীর শরীফ মাহমুদ সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তাহরীম হোসেন সীমান্ত, টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মেজর (অব.) আব্দুল হাফিজ, উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা রাফিউর রহমান খান ইউসুফজাই সানি, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ আহম্মদুল্লাহ জুয়েল, উপ-ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শ্যামল গোস্বামী, সদস্য ডা. সালাম প্রামানিক ও নাবিলা নোহাত চৈতি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মির্জা আনোয়ার হোসেন বাবুল ও সাধারণ সম্পাদক মাতিনুজ্জামান খান সুখন প্রমুখ।
উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি হাজী আবুল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান আকন্দ বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ে সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়ে প্রথম পর্বে নেতৃবৃন্দের বক্তৃতা চলছিল। এসময় মিলনায়তনের মাঝখানে বসার স্থান নিয়ে দুই কর্মীর মধ্যে বাগবিতণ্ডা হলে হাতাহাতি ও চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটে। এতে প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়। দ্বিতীয় পর্বে ৫ জন সভাপতি ও ৩ জন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ঘোষণা দেন।’
জেলা ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কমিটি গঠনের লক্ষ্যে বৈঠক চলছে বলে তারা জানান।