আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে দেশের প্রতিটি মানুষকে সুন্দর জীবন দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘দেশের মানুষকে অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের পরিবর্তে আমরা প্রত্যেককে একটি সুন্দর বাড়ি এবং একটি সুন্দর জীবন দেব। এটি হবে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে আমাদের অঙ্গীকার।’
শুক্রবার আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না এলে পরিবর্তন কখনোই আসত না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে।’
প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি গৃহহীন ব্যক্তিকে একটি বাড়ি দেয়ার লক্ষ্যে তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘বাংলাদেশে কেউ ভূমিহীন থাকবে না, কেউ গৃহহীন থাকবে না।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, তার সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ দিচ্ছে। এমনকি বিনামূল্যে ইনসুলিনও দেয়া শুরু হয়েছে।
‘তার মানে, আমরা অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান এবং শিক্ষার মতো মানুষের প্রতিটি মৌলিক চাহিদা পূরণ করছি। আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছি’, বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘সাক্ষরতার হার বৃদ্ধির ধারাবাহিকতার পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে আমাদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।’
কোভিড-১৯, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা-পাল্টা নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষিতে পরিবর্তিত বৈশ্বিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘(দেশের মানুষ) একটি কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, আমি এটা জানি। মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি।’
এসময় দেশের ধনী ব্যক্তিদের আশপাশে বসবাসকারী দরিদ্রদের প্রতি খেয়াল রাখার আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই কেবল জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হবে উল্লেখ করে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের দ্বারা, জনগণের জন্য এবং জনগণের সেবা করার জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটাই আওয়ামী লীগের মূলমন্ত্র।’
আওয়ামী লীগ সরকারে থাকলে জনগণ সুবিধা পায় এবং জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়, এটা প্রমাণিত সত্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জনগণ নৌকায় ভোট দিয়েছে বলেই আজ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন করা সম্ভব হয়েছে।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি জানি অনেক চক্রান্ত, ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না।’
একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য ২০২৬ সালের মধ্যে সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হবে বলে আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমরা অনেক দূর এগিয়ে এসেছি এবং আমরা এটি বাস্তবায়ন করব।’
এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন ও শফিউল আলম নাদেল, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. ডা. রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বেগম আক্তার জাহান, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফী, ঢাকা উত্তর মহানগর সভাপতি বজলুর রহমান প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ ও সহ-সভাপতি সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
১৯৪৯ সালের এই দিনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠিত হয়। এই দলই পরবর্তীতে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে দেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হয়।