ঈদের দ্বিতীয় দিনের মধ্যে কোরবানির পশু জবাই করতে রাজধানীবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
খিলগাঁও রেলওয়ে কাঁচাবাজার সংলগ্ন ১১ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্রের (এসটিএস) উদ্বোধন শেষে বুধবার সকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি এ আহ্বান জানান।
তাপস বলেন, ‘আমি ঢাকাবাসীর কাছে বিনীত নিবেদন করব যেন দুই দিনের মধ্যেই পশু কোরবানির কার্যক্রমটা সম্পন্ন করা হয়। আমাদের দীর্ঘদিনের একটি সংস্কৃতি যে, তৃতীয় দিনেও কোরবানি দেয়া হয়। আমরা যেন সেখান থেকে একটু সরে আসি। আমরা যেন সকল কোরবানি প্রথম এবং দ্বিতীয় দিনের মধ্যেই সম্পন্ন করি। কারণ একটানা ৭২ ঘণ্টা (ঈদের রাত হতে পশুর হাটের বর্জ্য অপসারণ শুরু করা হয়) কাজ করার পর আমাদের জনবলকে বিশ্রাম দেওয়া অত্যন্ত বাঞ্ছনীয়। তারা কিন্তু ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে না।
‘কারণ ঢাকাবাসীকে ঈদের আনন্দ উপহার দেয়ার জন্য, ঢাকাকে পরিষ্কার রাখার জন্য তারা একটানা ৭২ ঘণ্টা কাজ করে। অতএব মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও আমরা এই নিবেদনটা করব। আমাদের সকল প্রস্তুতি প্রায় শেষ পর্যায়ে। ইনশাল্লাহ গতবারের মতো এবারও আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ সম্পন্ন করতে পারব।’
তাপস বলেন, ‘ঈদুল আজহার কোরবানির পশুর বর্জ্য এবং হাটের বর্জ্য অপসারণ নিয়ে আমাদের একটি ব্যাপক প্রস্তুতি থাকে। আমরা সকল জনবল এবং সকল যান-যন্ত্রপাতি নিয়োজিত করি এবং আমরা অন্যান্য সংস্থা থেকেও যান-যন্ত্রপাতি নিয়ে থাকি। সুতরাং এটি একটি বিশাল কর্মযজ্ঞ।’
ওই সময় এডিস নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন, ‘আমরা কোনো দায় চাপানো বা দায় নিয়ে কোনো ধরনের আদান-প্রদান করতে চাই না। আমাদের দায়িত্ব নিয়ে আমরা অত্যন্ত ওয়াকিবহাল আছি। গত বছরও আমরা সফলতার সাথে এডিস মশার বিস্তৃতি মোকাবিলা করেছি। আমাদের সকল প্রস্তুতি, সক্ষমতা এবং পরিকল্পনা আছে। প্রত্যেক ওয়ার্ডেই আমাদের নির্দিষ্টসংখ্যক জনবল নিয়োজিত রয়েছে।
‘সকালে ৭ জন, বিকেলে ৬ জন এবং একজন সুপারভাইজর দিনব্যাপী তদারকি করে থাকে। এরপরে আমরা তদারকি করে থাকি। আমরা পয়লা শ্রাবণ থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণকক্ষ চালু করব। সুতরাং এডিস মশার বিস্তৃতি রোধ করার জন্য আমাদের সকল কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং ধাপে ধাপে এটি আরো গতিশীল হবে, বেগবান হবে।’
ঢাকাবাসীকে ডেঙ্গুর প্রজননস্থল সম্পর্কিত তথ্য দেয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে আমরা যে তথ্য (ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর তালিকা) পাচ্ছি, এর বাইরেও আমরা ঢাকাবাসীকে অনুরোধ করব, আপনাদের নজরে যদি কোথাও পানি জমে থাকে বলে দেখতে পান অথবা এডিস মশার লার্ভা থাকতে পারে বলে মনে হয়, তাহলে আমাদেরকে সাথে সাথে তথ্য দিন। আমাদের জনবল প্রত্যেকটা ওয়ার্ডেই নিয়োজিত রয়েছে। (আপনারা তথ্য দিলে) তারা দ্রুত ১৫ মিনিটের মধ্যে সেই জায়গায় যেতে পারবে এবং নিধন করতে পারবে।
‘লার্ভিসাইড, এডাল্টিসাইড করতে পারবে, যথাযথ ব্যবস্থা নিতে পারবে। এ ছাড়াও আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা শুরু হয়েছে। আমরা সরকার থেকে হাকিম পেয়েছি। তারা অভিযান চালিয়ে যাবে। আমরা ব্যাপক জায়গায় লার্ভা পাচ্ছি, জরিমানা করছি। আমরা অভিযানটা চলমান রাখব যাতে করে জনগণ, দায়িত্বশীল মহল, বিভিন্ন সংস্থা এবং বিভিন্ন আবাসন (কোম্পানি ও সরকারি আবাসন সংস্থা) তারা যেন আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে।’
এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।