সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বুধবার সকাল থেকে ৮টা থেকে শুরু হয়েছে ভোটগ্রহণ। সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত নগরের অন্তত ১০টি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে ভোটার উপস্থিতির বিপরীতমুখী চিত্র। কিছু কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ সারি থাকলেও কিছু ছিল ফাঁকা।
সিলেট নগরে এবার ৪২টি ওয়ার্ডে নির্বাচন হচ্ছে। এর মধ্যে নতুন ১৫টি ওয়ার্ডে এবারই প্রথম ভোট হচ্ছে।
ভোট কেন্দ্রগুলো ঘুরে দেখা যায়, নতুন ১৫টি ওয়ার্ডের কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি বেশি, তবে পুরোনো ২৭টি ওয়ার্ডের কেন্দ্রগুলোতে ভোটার উপস্থিতি অপেক্ষাকৃত কম। এসব ওয়ার্ডের অনেক কেন্দ্র ফাঁকা দেখা যায়, তবে ভোটকেন্দ্র ফাঁকা থাকলেও বাইরে ভিড় দেখা গেছে।
বুধবার সকাল ১০টায় ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আম্বরখানা গার্লস স্কুল কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ভোটকেন্দ্র প্রায় ফাঁকা। এক-দুইজন করে ভোটার এসে ভোট দিচ্ছেন।
ভোটার উপস্থিতি কম জানিয়ে এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার দিবেন্দু রায় বলেন, ‘এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ২৮৩৪। প্রথম দুই ঘণ্টায় ভোট পড়েছে ১৩৪টি।’
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি।
একইভাবে নগরের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের দুর্গাকুমার পাঠশালায় গিয়েও ভোটার উপস্থিতি তেমন দেখা যায়নি।
এই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সেলিম আহমদ বেলা ১১টায় জানান, তিন ঘণ্টায় ৩ হাজার ২০০ ভোটারের মধ্যে ৩০০ জন ভোট দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, সকালে ভোটার উপস্থিতি কম ছিল। এখন উপস্থিতি বাড়ছে।
সকাল ১০টায় এই কেন্দ্রে ভোট দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবুল মোমেন।
ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘যারা ভোটার উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলে তাদের দেশের লোকজন ভোট দিতেই আগ্রহী নয়। আমাদের তো অনেক ভোটার এসেছে। প্রচুর নারীরা এসেছেন।’
নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নগরের সুবিদবাজার এলাকার আনন্দ নিকেতন স্কুলে ভোট দেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। এ কেন্দ্রেও তেমন ভোটার দেখা যায়নি।
আনন্দ নিকেতন কেন্দ্রে সকাল সোয়া ৯টায় ক্রাচে ভর দিয়ে ভোট দিতে আসেন ওহিদা বেগম।
কষ্ট করে আসার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এক ভোটের জন্য একজন পাস বা ফেল করতে পারেন।’
পার্শ্ববর্তী শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে মা শিখা ঘোষকে নিয়ে প্রথম ভোট দিতে আসেন শিপ্রা ঘোষ। তিনি বলেন, ‘জীবনের প্রথম ভোট, তাও ইভিএমে খুব ভালো লাগছে।’
পুরোনো ওয়ার্ডগুলোতে ভোটার উপস্থিতি কম জানিয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আজাদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘পুরোনো ওয়ার্ডগুলোতে ভোটাররা কেন্দ্রে কম আসছেন, তবে নতুন ওয়ার্ডগুলোতে প্রচুর ভোটার কেন্দ্রে আসছেন।’
আজাদের কথার প্রমাণ পাওয়া গেল নগরের নতুন ১৫টি ওয়ার্ডের কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে।
এবার প্রথম ভোট হওয়া ৪২ নম্বর ওয়ার্ডের আল-জামেয়া আইডিয়াল একাডেমি কেন্দ্রে দেখা যায়, সকাল সাড়ে সাতটা থেকেই লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন ভোটাররা।
আল-জামেয়া আইডিয়াল একাডেমি কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা চৌধুরী নিশাতুর রহমান কোরেশি বেলা ১১টায় বলেন, ‘ভোট শান্তিপূর্ণভাবে চলছে। কোনো ধরনের ঝামেলা নেই। এখন পর্যন্ত ২০ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছে।’
এই ওয়ার্ডের ইছরাব আলী হাই স্কুল কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার সেলিম আহমদও ভোটার উপস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন, তবে ইভিএমে ভোটগ্রহণে একটু দেরি হচ্ছে বলে জানান তিনি।
নগরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজালাল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের ভিড়।
এখানকার প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ‘ভোটার উপস্থিতি ভালো, তবে ইভিএমে ভোটগ্রহণে দেরি হচ্ছে।’
দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ কেন্দ্রের ৩ হাজার ৮৫ ভোটের মধ্যে ২০ শতাংশ ভোটগ্রহণ হয়েছে বলে জানান তিনি।