মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ে বাধা দেয়ায় বগুড়ায় হামলার শিকার হয়েছেন জোজিফ হোসেন প্রতীক নামে এক সাংবাদিক। গুরুতর আহত প্রতীক বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুর দেড়টার দিকে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া পশ্চিম পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
৩১ বছর বয়সী প্রতীক ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বগুড়া ব্যুরো অফিসে প্রতিবেদক হিসেবে কর্মরত এবং বগুড়া জেলা প্রেসক্লাবের কার্যনির্বাহী সদস্য।
স্থানীয়দের বরাতে পুলিশ জানায়, সাংবাদিক প্রতীকের স্ত্রী পশ্চিম ঠনঠনিয়া এলাকার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন। আজ দুপুর দেড়টার দিকে স্ত্রীকে দেখে বাসায় ফেরার পথে তিনি দেখেন এক ব্যক্তিকে কয়েকজন মিলে মারধর করছে। একই সঙ্গে ওই ব্যক্তির মোটরসাইকেলের চাবি কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করছিল তারা। ঘটনাটির প্রতিবাদ করেন প্রতীক। তখনই তার ওপর চড়াও হয় ছিনতাইকারীরা।
ওই সময় প্রতীককে অন্তত সাতজন মিলে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। হামলা শুরু করলে মোবাইল বের করে সহকর্মীদের ও পুলিশে খবর দেন সাংবাদিক প্রতীক। এ সময় তার হাত থেকে মোবাইল, চাবিসহ মোটরসাইকেলও কেড়ে নেয় তারা। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে একজন মোটরসাইকেলটি ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। এসময় হৈচৈ শুনে লোকজন জড়ো হলে মোবাইল ও চাবি ফেলে সটকে পড়ে ছিনতাইকারীরা।
সাংবাদিক প্রতীক বলেন, “ক্লিনিক থেকে ফেরার সময় দেখতে পাই রাস্তার ওপর একজনকে মারধর করছে ওই এলাকার দুই-তিনজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। এই সময় তারা লোকটির মোটরসাইকেল নিয়ে যাচ্ছিল। মারা কারণ জিজ্ঞেস করতেই তারা বলে ওঠে, ‘তুই কে?’ আমি পরিচয় দেয়ার পরপরই তারা এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমে সুমন, তার ভাই কাদের ও শামীম নামের তিনজন আমাকে প্রহার শুরু করে। পরে আরও ৪ থেকে ৫ জন আমার মাথার হেলমেট কেড়ে নিয়ে মাথায় ও বুকে আঘাত করে। এসময় তারা আমার মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেল কেড়ে নেয়। পরে পুলিশ এসে পড়েলে মোবাইল ও চাবি ফেলে চলে যায় তারা।’
স্থানীয়দের ভাষ্য, ‘সুমন, কাদের ও শামীমদের কর্মকাণ্ডে এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ। এই সন্ত্রাসী দলটি দীর্ঘদিন ধরে আইনের চোখে ধুলো দিয়ে ঠনঠনিয়া, খান্দার এলাকায় বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ায়। ছিনতাই, খুনের সঙ্গেও তারা জড়িত। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালীদের প্রশ্রয়ে থাকার কারণে তারা অপরাধ করতে ভয় করে না। ফলে এলাকাবাসীও কাউকে কিছু বলতে সাহস পায় না।’
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের উত্তরাঞ্চল প্রধান ও বগুড়া জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসিবুর রহমান বিলু বলেন, ‘হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তাদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ওই এলাকা দীর্ঘদিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে তারা। এটা এলাকাবাসী জানলেও ভয়ে কেউ মুখ খোলেন না। এই চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জোর দাবি জানাচ্ছি।’
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, ‘খবর পাওয়ার পরপরই আমাদের তিনটি টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহত সাংবাদিককে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।’