শান্তিপূর্ণ নির্বাচনই রাজনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের একমাত্র উপায় হলেও বিএনপি তা বাধাগ্রস্ত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন চাইলেও বিএনপি বিদেশিদের কাছে বিচার দিচ্ছে, ষড়যন্ত্র করছে, এমনকি দেশের বদনামও করছে।
সোমবার আওয়ামী লীগের ধানমণ্ডি কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে এসব কথা বলেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজ বিশ্বময় রাজনীতিতে সংকট চলছে। আমাদের দেশও এসব সংকটের বাইরে নয়। ফলে আগামী জাতীয় নির্বাচন চ্যালেঞ্জিং। এখানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক উভয় সংকট একাকার হয়ে গেছে। আমাদের মতো দেশ সেই সংকট থেকে রেহাই পাবে, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।’
‘তবে আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশের রাজনীতিতে মেরুকরণ হচ্ছে। পরস্পরবিরোধী মতের প্রদর্শন হচ্ছে।’
কিন্তু বিএনপির নেতৃত্বাধীন একটি মহল নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চায় অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘আমরা দেশে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করতে চাই। কিন্তু বিএনপি নেতারা জানেন, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলে তাদের হেরে যাওয়ার ভয় আছে। তারা বোঝেন যে শেখ হাসিনা অত্যন্ত জনপ্রিয়। এই অবস্থায় নির্বাচন হলে তারা জয়লাভ করতে পারবেন না। তাই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ, বাধাগ্রস্ত করাই এখন তাদের কাজ।’
‘নিজেরা ব্যর্থ হয়ে বিদেশি শক্তি ব্যবহার করতে চায় বিএনপি। এজন্য তারা প্রথমে বিদেশিদের কাছে নালিশে গেছে। এখন আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। সর্বশেষ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের অপপ্রচারের সাথে তাদের অপপ্রচার একাকার হয়ে গেছে।’
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘খুবই চ্যালেঞ্জিং’ জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অশান্তির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে যাতে কেউ নির্বাচনে বাধা দিতে না পারে। অতীতের মতো সন্ত্রাস, আগুন সন্ত্রাস করে বিএনপি যেন নির্বাচনী পরিবেশকে নষ্ট করতে না পারে সেজন্য আগামী নির্বাচন পর্যন্ত আমারা মাঠে থাকব। শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগে নির্বাচন ব্যবস্থা স্বাধীন করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচন অবাধ হওয়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন।
‘আমরা নির্বাচনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানাব, কীভাবে নির্বাচন করছি সেটা দেখে যান। এমনকি কয়েকটি নির্বাচন তারা দেখেছেনও। বিএনপির ব্যাপারটা হলো তারা না জিতলে নির্বাচন কোনোদিন অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। তাই তারা দেশে দেশে সুনামের সঙ্গে শান্তিরক্ষায় নিয়োজিত দেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ কাজে তারা ব্যবহার করছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালকে।’
২৩ জুন আওয়ামী লীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সাদামাটাভাবে, স্বতঃস্ফূর্ত ও বহুমাত্রিকভাবে মাসব্যাপী উদযাপন করা হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডক্টর হাছান মাহমুদ, মাহবুব উল আলম হানিফ, আফম বাহাউদ্দীন নাছিম, ডাক্তার দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।