বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কামারপাড়ায় বেড়েছে ব্যস্ততা, শঙ্কা লোডশেডিং নিয়ে

লিটন নামের এক কামার বলেন, ‘বর্তমানে কারেন্টের জন্য অশান্তিতে ভুগতেছি। গত কয়েক বছর তো করোনার কারণে ব্যবসা হয়নি। এ বছর আশা করছি ব্যবসা হবে, কিন্তু কারেন্টের জন্য ব্যবসা করতে পারছি না। এখন কারেন্টে হাওয়া দেয়া হয়, ধারালো করা হয়। পাশাপাশি হাত মেশিনও আছে, তবে কারেন্ট মেশিনে কাজ আগায়। হাত মেশিনে কাজ আগায় না।’

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে দিনাজপুরে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারদের। তাদের আশা, এবার ঈদের মৌসুমে করোনাভাইরাসের সময়কার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন। একই সঙ্গে লোডশেডিং নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা।

দিনাজপুর জেলা শহরের মহারাজা গিরিজানাথ উচ্চ বিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীর ধরে এগোলেই চোখে পড়ে বেশ কয়েকটি কামারের দোকান। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে কাজ চলে। এসব দোকানে তৈরি হয়, দা, বটি, চাপাতি, কাস্তে, চাকুসহ বিভিন্ন লোহার জিনিসপত্র।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে দোকানগুলোতে অন্যান্য দিনের চেয়ে ঠুকঠাক শব্দের জোর বেশি শোনা যায়। কর্মরত কামারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে তাদের এমন ব্যস্ততা।

‘যখন করোনা ছিল, তখন ব্যবসা একদমই হয়নি। মানুষ তো কোরবানি দেয়নি। তো আমাদের ব্যবসা হবে কীভাবে? এবার ব্যবসা হবে বলে আমরা আশা করছি। যদিও এখন ব্যবসাটা শুরু হয়নি, তবে আভাস তো পাওয়াই যায়। অনেক জিনিস তৈরি করছি’, বলেন পলাশ নামের এক কামার।

‘এখন পর্যন্ত কিছু ব্যবসা হইছেও, কিন্তু এর আগে যখন করোনা ছিল, তখন এত আগে বেচাবিক্রি শুরু হয়নি। আল্লাহ দিলে ব্যবসাটা হবে এবার। আর করোনার যে ক্ষতি, সেটা পূরণ হবে আশা করছি’, যোগ করেন তিনি।

কামারপাড়ায় কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে পশু জবাইয়ের জন্য বেশি পরিমাণে তৈরি হচ্ছে দা, চাপাতি, ছুরি, বটির মতো সামগ্রী। পাশাপাশি বছরের অন্যান্য সময়ের মতোই কাস্তে, খড় কাটার যন্ত্রসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বানানো হচ্ছে। এখানে প্রকারভেদে দা, চাপাতি, ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বটি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়।

কামারদের ভাষ্য, লোহার দাম বেশি হওয়ায় এ বছর জিনিসপত্রের দাম একটু বেড়েছে। এবার তারা প্রতি কেজি লোহা কিনছেন ৯০ থেকে ১২০ টাকা দরে।

‘বর্তমানে কারেন্টের জন্য অশান্তিতে ভুগতেছি। গত কয়েক বছর তো করোনার কারণে ব্যবসা হয়নি। এ বছর আশা করছি ব্যবসা হবে, কিন্তু কারেন্টের জন্য ব্যবসা করতে পারছি না। এখন কারেন্টে হাওয়া দেয়া হয়, ধারালো করা হয়। পাশাপাশি হাত মেশিনও আছে, তবে কারেন্ট মেশিনে কাজ আগায়। হাত মেশিনে কাজ আগায় না’, বলেন লিটন নামের এক কামার।

‘সারা দিনে ঘণ্টায় ঘণ্টায় কারেন্ট যাচ্ছে। জিনিসপত্র বানাতেই পারছি না। এখন বেশি বিক্রি হবে চাপড় (চাপাতি), চাকু (ছুরি), বটি। জিনিসপত্র বানাতে পারলে এবার ব্যবসা হবেই। আর লোকসানের ক্ষতিপূরণও হবে’, যোগ করেন তিনি।

করোনাকালে উল্লেখ করার মতো ব্যবসা হয়নি বলে জানান মোহাম্মদ লালু। তার ভাষ্য, ‘করোনার সময় ব্যবসার প্রশ্নই ওঠে না। করোনার সময় তো ব্যবসা পাঁচ হাজারও করতে পারিনি। তখন অনেক দিশেহারা ছিলাম। আল্লাহ যদি চায়, এবার দিশেহারা অবস্থা চলে যাবে, তবে শঙ্কা যে নাই, তা নয়। এবার কারেন্ট আমাদের দিশেহারা করে দিছে।

‘কারেন্ট যদি পর্যাপ্ত না পাই, তবে কাজ হবে না। আর লোকসানও পূরণ হবে না। যদি কারেন্ট থাকে, তবে করোনার সময় যদি ১০ টাকা বিক্রি হয়, এবার ২০ টাকা বিক্রি হবে, এটা নিশ্চিত, তবে হে যদি আল্লাহ চায়।’

লালুর মতো ব্যবসা ভালো হবে মনে করা রতিন বলেন, ‘এবার ব্যবসা ভালো হবে। এখনই কিছু বেচাবিক্রি শুরু হইছে। জিনিসপত্র বানাচ্ছি বেশি বেশি। কয়েক দিন পরে আরও বেশি বিক্রি হবে, এমনটাই আশা করছি এবার।

‘এবার যদি ঈশ্বর চায়, তবে ব্যবসা ৬০ থেকে ৭০ হাজার পর্যন্ত হবে, যেখানে করোনা সময় ১০ হাজারও হয়নি।’

এ বিভাগের আরো খবর