মাত্র এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। জলাবদ্ধতার কারণে যানবাহন চলাচল কমে যায়, সুযোগে গণপরিবহন আদায় করে অতিরিক্ত ভাড়া, আর চরম দুর্ভোগে পড়ে সাধারণ মানুষ।
শনিবার দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত বৃষ্টিতে নগরীর নিচু অঞ্চলগুলো পানিতে তলিয়ে যায়।
এদিন বৃষ্টির পর নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বহদ্দারহাট, কাতালগঞ্জ, নিউ মার্কেট, হালিশহর, বাকলিয়সহ বিভিন্ন এলাকায় হালকা থেকে হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকার বাসিন্দা আক্কাস উদ্দিন বলেন, ‘আমি বৃষ্টির পর নিউ মার্কেটের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলাম একটা জরুরি কাজে। কিন্তু সড়কে দেখি কোনো বাস নেই৷ পরে রিকশা নিয়ে গিয়ে দেখি তিন পুলের মাথার ওই দিকে হাঁটু পানি।’
চট্টগ্রাম শহরে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানান নগরীর আমবাগান আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষণ কর্মকর্তা মো. ইউছুপ।
তিনি বলেন, ‘এখন মেঘ ভেঙে গেছে; ফলে শহরের আশেপাশে বৃষ্টি হতে পারে। তবে পরবর্তী কয়েকঘণ্টায় শহরে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই।’
জলাবদ্ধতা চট্টগ্রাম নগরীর বড় সমস্যাগুলোর অন্যতম। গত কয়েক দশক ধরেই জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ মাথায় নিয়ে চলছে নগরবাসী। জলাবদ্ধতা নিরসনে ১০ হাজার ৯২১ কোটি টাকার চারটি বড় সরকারি প্রকল্প চলছে বছরের পর বছর। এই চার প্রকল্পের প্রতিটিরই সময় ও ব্যয় বাড়লেও সুফল পাচ্ছে না নগরবাসী।
বড় চার প্রকল্পের মধ্যে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) হাতে। ‘চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ নামের এই পকল্পে ইতোমধ্যে খরচ হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা। জলাবদ্ধতা নিরসনে আরেকটি বড় প্রকল্প ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ’ও সিডিএ’র হাতে। ২ হাজার ৩১০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে এর মধ্যে খরচ হয়েছে ১ হাজার ২০০ কোটি টাকা। তারপরও বর্ষা মৌসুম আসলেই দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীর।