শরীয়তপুরে আসামি ও ব্যবসায়ীকে নির্যাতনের অভিযোগের ঘটনায় পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান ও ওসি (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহম্মেদ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে দেয়া এ আদেশ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পৌঁছায় বলে শুক্রবার নিশ্চিত করেছেন জেলার পুলিশ সুপার সাইফুল হক।
মোস্তাফিজুর রহমানকে চট্টগ্রাম ও সুরুজ উদ্দিনকে বরিশাল রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। বর্তমানে তারা শরীয়তপুরে কর্মরত আছেন। এর আগে ৭ জুন মোস্তাফিজুরকে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা থেকে বদলি করে জেলা পুলিশ অফিসে সংযুক্ত করা হয়েছিল।
শরীয়তপুরের নাওডোবা বাজারের ব্যবসায়ী আবু জাফর ওরফে ঠান্ডু চোকদারকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে ৭২ লাখ টাকার চেক নেয়ার এবং একটি ছিনতাই মামলায় উচ্চ আদালতের জামিনে থাকা চার আসামিকে আটক করে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ ওঠার পর এই দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
ওই ঘটনায় অভিযুক্ত আরেক পুলিশ কর্মকর্তা নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনিরের বিরুদ্ধে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
গত ১ জুন পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন নাওডোবা বাজারের ব্যবসায়ী আবু জাফর ওরফে ঠান্ডু চোকদার। অভিযোগে বলা হয়, ৩১ মে গভীর রাতে জাফরকে বাড়ি থেকে থানায় তুলে নেন জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুরুজ উদ্দিন আহমেদ। সেখানে নিয়ে নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওই থানার ওসি শেখ মোস্তাফিজুর রহমান তাকে ছিনতাই মামলার আসামির তার চার আত্মীয়ের পক্ষে ৭২ লাখ টাকা দেয়ার জন্য চাপ দেন।
এতে বলা হয়, রাজি না হওয়ায় জাফরকে রাতভর আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের এক পর্যায়ে ৭২ লাখ টাকার চেক দিতে রাজি হন তিনি। পরদিন একটি বেসরকারি ব্যাংকের পাঁচটি চেকের মাধ্যমে ৭২ লাখ টাকা পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমানকে পৌঁছে দেন তিনি।
পর দিন তার ওপর নির্যাতন ও চেক নেয়ার কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপারের বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন জাফর। পরে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদিউজ্জামানকে বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেন পুলিশ সুপার সাইফুল হক। তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার সকালে তদন্ত প্রতিবেদন পুলিশ সুপারের কাছে জমা দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বদিউজ্জামান। এর পরদিন দুই পুলিশ কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্তের কথা জানালেন পুলিশ সুপার।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার সাইফুল হক জানান, পুলিশের দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের শরীয়তপুর থেকে অন্যত্র সংযুক্ত করা হয়েছে।
নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। শিগগিরই গণমাধ্যমকর্মীদের এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।