জুয়েলারি দোকান থেকে স্বর্ণালঙ্কার চুরির পর সেগুলো বিক্রি হয় অর্ধেকের চেয়ে কম দামে, ওজনেও দেয়া হয় বেশি। চোরাই স্বর্ণ ১৬ আনায় ভরির বদলে বিক্রি হয় ২০ আনা ভরিতে। প্রতি ভরির দাম ধরা হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
পুরান ঢাকার তাতীবাজার, উত্তরা, মিরপুর, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে চোরাই স্বর্ণ বেচাকেনা হয়।
ভাটারার একটি জুয়েলারি দোকানে চুরির অভিযোগে বুধবার আটজনকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ টিম। তাদের কাছ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
চোরাই স্বর্ণ কিনেন, এমন কয়েকজন ব্যবসায়ীকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার মশিউর রহমান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব জানান।
মশিউর রহমান জানান, চুরির আগে রেকি করে চোর চক্রের সদস্যরা। যেসব দোকানে সিসি ক্যামেরা নেই, সেগুলো টার্গেট করে। মালিক ও কর্মচারি কখন দোকানে আসেন, কখন যান সবই পর্যবেক্ষণ করে সুযোগ বুঝে চুরি করা হয়।
দোকান বা প্রতিষ্ঠানের সামনে বড় ছাতা বা চাদর মেলে দ্রুততার সঙ্গে তালা কেটে মালামাল ও টাকা নিয়ে পালান চোরেরা।
একই কায়দায় গত ১৪ এপ্রিল জুমার নামাজের সময় ছাতা দিয়ে আড়াল তৈরি করে ভাটারার নূর জুয়েলার্সে চুরি হয়।
দোকান মালিক দাবি করেন, ১৮৬ ভরি স্বর্ণ ও ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে চোরেরা।
ঘটনার তদন্তে ডিবি পুলিশ জানতে পারে, চুরিতে ১৩ জন অংশ নেয়। তাদের মধ্যে আটজনকে কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্তদের কাছ থেকে ২ ভরি স্বর্ণ, ১২ লাখ টাকা, তালা কাটার যন্ত্রপাতি এবং চুরিতে ব্যবহার করা ছাতা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার আটজন হলেন শরীফ, আমির হোসেন, ইয়াছিন আরাফাত মোল্লা, ফারুক, নূরে আলম সুমন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোকাররম হোসেন রুবেল ও পারভেজ।
ডিসি মশিউর রহমান আরও জানান, এক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে চুরি হওয়া স্বর্ণ আরেক ব্যবসায়ী কিনেন। ৯৫ থেকে ৯৮ হাজার টাকার ভরি কিনেন ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায়।
ওজনেও বেশি দেয়া হয়। সাধারণত ১৬ আনায় ভরি হলেও চোরাই স্বর্ণ বিক্রি হয় ২০ আনায় ভরিতে।
ডিসি মশিউর রহমান বলেন, ‘গ্রেপ্তার আসামিদের রিমান্ডে এনে বিস্তারিত জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। চোরাই স্বর্ণ যারা কিনেন, তাদেরও নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে।’