সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় জাল শিক্ষা সনদসহ অসত্য তথ্য প্রদানের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন এক ব্যক্তি।
সোমবার বিকেলে সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদেরের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন এ কে এম আবু হুরায়রা সাজু নামের ওই ব্যক্তি।
লিখিত অভিযোগে আনোয়ারুজ্জামানের প্রার্থিতা বাতিলেরও দাবি জানিয়েছেন তিনি। তবে এ অভিযোগকে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।
আবু হুরায়রা সাজু সিলেট নগরের নরসিংটিলা এলাকার বাসিন্দা।
লিখিত অভিযোগে আবু হুরায়রা সাজু উল্লেখ করেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তার হলফনামায় জন্ম তারিখ ১৯৭০ সালের ১ জুলাই এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা বিএ (সম্মান) উল্লেখ করেছেন। কিন্তু তিনি ১৯৮৮ সালে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড কুমিল্লা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর ৮৪২০৮ ও শিক্ষাবর্ষ ১৯৮৬-১৯৮৭। রেজিস্ট্রেশন, প্রবেশপত্র ও সনদপত্র অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ১৯৭২ সালের ১ জুলাই।
অভিযোগে আরও বলা হয়, পরবর্তী সময়ে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তার জন্ম তারিখ পরিবর্তন করার জন্য কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড বরাবর আবেদন করেছিলেন। কিন্তু বোর্ড কর্তৃপক্ষ তার এ আবেদন নামঞ্জুর করে। এ ছাড়া তিনি কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড থেকে ১৯৮৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ১৯৯০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ না করেই বাংলাদেশ ইয়ুথ প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাজ্যে যান। সেখানেই সপরিবারে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশে কোনো প্রকার পড়াশোনা কিংবা পরীক্ষায় অংশ নেননি। এ ছাড়া আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পাসপোর্টের জন্ম তারিখের সঙ্গে এসএসসির সনদে উল্লেখিত জন্ম তারিখের মিল নেই।
অভিযোগে তিনি আরও দাবি করেন, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী হলফনামায় ভুল জন্ম তারিখ উল্লেখ করে এবং সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতার জাল সনদ দাখিল করে নির্বাচনী বিধিমালা ২০১০-এর বিধি ১৪-এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছেন। তিনি দণ্ডবিধি ১৮৬০-এর ধারা ১৮১ অনুযায়ী ফৌজদারি আইনে অপরাধ করেছেন, যার সর্বোচ্চ শাস্তি ৩ বছরের কারাদণ্ডসহ জরিমানা।
লিখিত অভিযোগে, হলফনামায় অসত্য তথ্য দেয়া এবং জালিয়াতির আশ্রয় নেয়ায় মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর প্রার্থিতা বাতিলের পাশাপাশি ফৌজদারি আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
অভিযোগ পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে মঙ্গলবার সিলেটের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বলেন, ‘প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের একটা নির্দিষ্ট সময় ছিল। এ সময়ের মধ্যে অভিযোগ এলে আমরা তদন্ত করে দেখতাম। কিন্তু এখন এ ব্যাপারে আমাদের আর কিছু করার নেই।’
এ অভিযোগকে মিথা দাবি আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলক ভাবে এ অভিযোগ দেয়া হয়েছে। হলফনামায় আমি সঠিক তথ্য দিয়েছি। আমার কাছে শিক্ষাসনদ রয়েছে।’