নিরাপদ সড়ক আন্দোলনে উস্কানি দেয়ার অভিযোগে ছাত্রলীগের করা মামলায় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত।
তবে আদেশের বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিভিশন দায়েরের কথা জানিয়েছেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর আইনজীবী মফিজুল হক ভূঁইয়া।
সোমবার চট্টগ্রামের দ্বিতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মুহাম্মদ আমিরুল ইসলামের আদালত এই আদেশ দেয়।
পুলিশের তদন্ত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলায় আমির খসরুর সঙ্গে কুমিল্লার সাবেক ছাত্রদল নেতা ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমীকেও আসামি করা হয়।
আদেশের সময় আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মিলহানুর রহমান নাওমী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাডভোকেট মফিজুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫ (৩) ধারায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। ২০ সেপ্টেম্বর সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য্য করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘মূল মামলাটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। তবে পুলিশ তদন্ত করে এটা ‘তথ্যগত ভুল’ বলে প্রতিবেদন দিয়েছে। মূল মামলায় অভিযোগ ছিল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে। এখন মূল মামলাটাই যদি মিথ্যা হয়, ওনি ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে রাষ্ট্রদ্রোহ করলেন কেমনে? আমরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে রিভিশন দায়ের করব। মামলাটি টিকবে না।’
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও আবদুল করিম রাজিব নিহত হয়। এরপর নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মাঝামাঝি সময়ে আমির খসরু ও ব্যারিস্টার মিলহানুর রহমান নাওমীর একটি ফোনকলের কথোপকথন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাত ও ষড়যন্ত্রের চেষ্টার অভিযোগ এনে তথ্য-প্রযুক্তি আইনে আমির খসরুকে আসামি করে চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন নগর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর।
ওই মামলায় ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর উচ্চ আদালতের অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের মেয়াদ শেষে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠায় আদালত। এক মাস পর জামিনে মুক্তি পান তিনি৷
এই মামলায় আমির খসরুর পাশাপাশি পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মিলহানুর রহমান নাওমীকেও আসামি করা হয়। ওই বছরের ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের একটি আদালতে আত্মসমর্পণ করলে তাকেও কারাগারে পাঠায় আদালত। এরপর মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন নগর পুলিশের উপ-পরিদর্শক সঞ্জয় গুহ।
পুলিশের প্রতিবেদনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অভিযোগের সত্যত্য পাওয়া না যাওয়ায় তথ্যগত ভুল উল্লেখ করা হয়। তবে বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগপত্রে টেলিফোনে কথোপকথনের মাধ্যমে রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র এবং অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।