বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আলোচনায় সংলাপ

  •    
  • ৮ জুন, ২০২৩ ০৮:৪৭

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্ল্যাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদেশি বন্ধুরা আমাদের নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। অনেক ইস্যুতে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হয়, তবে সম্প্রতি আমাদের দলের প্রতিনিধিরা সৌজন্য সাক্ষাতেই গেছেন।’

এক দিন আগেই জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে বক্তব্য দিয়ে বুধবার বিপরীত কথা বলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, ‘কাউকে সংলাপে আহ্বান করার সুযোগ নেই। এটা আওয়ামী লীগের বাড়ির দাওয়াত না যে, দাওয়াত করে এনে খাওয়াব। আলোচনার জন্য কাউকে বলা হয়নি, কাউকে দাওয়াত দেয়া হয়নি।’

আমুর মঙ্গলবারের বক্তব্যের পর দেশের রাজনীতিতে সংলাপ নিয়ে আলোচনা ডালপালা মেলতে থাকে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলসহ রাজনীতি সচেতনরা ধরে নিয়েছিলেন ‘পারদ গলতে শুরু করেছে’। পরের দিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘সংলাপের কোনো বিকল্প নেই। আমরা মনে করি, সবকিছুই সংলাপের মাধ্যমে, আলোচনার মাধ্যমে শেষ করতে হবে।’

একই দিনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদের বক্তব্য ছিল ভিন্ন। আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় এ দুই নেতা বলেন, বিএনপির সঙ্গে আলোচনার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। দেশে এমন কোনো সংকটও নেই যে, জাতিসংঘের মধ্যস্থতা লাগবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি কিছু না বললেও কোনো চাপে নতি স্বীকার করবেন না বলে জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের এমন অবস্থানের পরও পর্যবেক্ষক মহল মনে করছে, তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে হয়তো তথ্য আদান-প্রদান হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে তারা যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির নেতাদের সাম্প্রতিক বৈঠকের বিষয়টিকে সামনে এনেছে।

সংলাপের বিষয়ে জানতে চাইলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক বদিউল আলম মজুমদার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পরিস্থিতি জটিল। বিদেশি বন্ধুরা জড়িয়ে পড়েছে। উল্লেখযোগ্য দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বসছেন। আলোচনাও নিশ্চয়ই কিছু হচ্ছে। এখন দেখা যাক পরিণতি কী হয়।

‘খুব আশাব্যঞ্জক মনে হয় না, তবে আশা করছি আলাপ-আলোচনায় একটি সমাঝোতা হবে। যদি নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য না হয়, আমরা জটিলতায় পড়ব।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সমস্যা সমাধান আমাদেরকেই করতে হবে। কারও মধ্যস্থতার দরকার নেই। কেননা সরকার এবং বিরোধী দল উভয়ই বলছে, তারা সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। তাহলে আলাপ-আলোচনায় একটা সমাধান আসতেই পারে।’

আমির হোসেন আমুর মঙ্গলবারের বক্তব্যের পর বুধবার ওবায়দুল কাদের জানান, বিএনপির সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেননি তারা। হাছান মাহমুদ বলেন, আমুর বক্তব্য ব্যক্তিগত, দল ও সরকারের মধ্যে এ নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এমনকি ১৪ দলের মধ্যেও নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূতের ব্যস্ততা

নির্বাচনের সাত মাসেরও কম সময় আগে বাংলাদেশের রাজনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে ব্যস্ত সময় পার করছেন ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূত পিটার হাস। তিনি গত ৬ জুন দুপুরে বৈঠক করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে। একই দিন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এবং আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন হাস। এর আগে ৪ জুন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। একই দিনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে তার কার্যালয়ে বৈঠক করে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দল।

সাম্প্রতিক অতীতে আওয়ামী লীগ-বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও ইইউর দূতের বৈঠক হয়। এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার সঙ্গেও বৈঠক করেন হাস।

বৈঠকগুলোকে শুরুর দিকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলা হলেও বর্তমানে মুখ খুলতে শুরু করেছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মুখপাত্র শন ম্যাকিনটোশ মঙ্গলবার ইমেইলে একটি সংবাদমাধ্যমকে জানান, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস বৈঠক করেছেন। বৈঠকে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া নির্বাচনী প্রচার, প্রক্রিয়াসহ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকারের বিষয়ে আলোচনা করেছেন তারা।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে রাজনীতিবিষয়ক লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘রাজনীতিবিদরা মুখে অনেক কিছুই বলে, কিন্তু গত কয়েক দিন বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে তাদের বৈঠক বলে দেয়, তলে তলে অনেক কিছুই হচ্ছে। সেটা হতে পারে আলোচনা, দেন-দরবার, তবে সেটা বাইরে থেকে বোঝার সুযোগ নেই।’

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্ল্যাহ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদেশি বন্ধুরা আমাদের নানাভাবে সাহায্য করে থাকে। অনেক ইস্যুতে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হয়, তবে সম্প্রতি আমাদের দলের প্রতিনিধিরা সৌজন্য সাক্ষাতেই গেছেন।’

বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দল ও সরকারের স্পষ্ট অবস্থান, সাংবিধানিকভাবে নির্বাচন হতে হবে। এতে নতুন করে আর আলোচনার কিছু নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর