বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পরিবেশ রক্ষায় ব্যর্থ হলে আগামী প্রজন্ম কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে: তথ্যমন্ত্রী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ৫ জুন, ২০২৩ ১৯:৫৬

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বছরে পৃথিবীতে ৪শ’ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন হয় যার মধ্যে বাংলাদেশ প্রায় উৎপাদন হয় ৩ হাজার টন। বিশ্বব্যাপী ১১ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হয়। এ অবস্থা চললে বিশেষজ্ঞদের মতে ৫০ বছরে বিশ্বের অনেক জলাধার মৎস্যশূন্য হয়ে পড়বে।’

দেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত থেকে রক্ষা করার জন্য শুধু সরকার নয়, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে সোমবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অন্য কারো জন্য নয়, নিজেদের ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যই পরিবেশ ও প্রকৃতি সংরক্ষণ এবং বন সৃষ্টি করা প্রয়োজন। অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের আসামীর কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।

‘জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত আমাদের নিত্য সঙ্গী। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্ত বিরূপ প্রভাব আমাদের দেশে দৃশ্যমান। সে প্রেক্ষাপটে আমাদের দেশে পরিবেশ সংরক্ষণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাপনায় সেই দুরূহ কাজ করতে গিয়ে অনেক সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছে আমাদের সরকার।’

২০১৫ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পরিবেশ সংরক্ষণে বিশ্বের সর্বোচ্চ পদক ‘চ্যাম্পিয়ন অফ দ্য আর্থ’ পুরস্কারে ভূষিত করা হয়েছে জানান তথ্যমন্ত্রী।

ড. হাছান বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ, মাথাপিছু সর্বনিম্ন কৃষি জমি ও আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীর ৯২তম দেশ হওয়া সত্ত্বেও ধান ও মিঠাপানির মাছ উৎপাদনে বিশ্বে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, আলু উৎপাদনে সপ্তম এবং খাদ্যশস্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ছোট্ট একটি দেশে প্রধানমন্ত্রীর অনন্য ব্যবস্থাপনাতেই এটি সম্ভবপর হয়েছে।‘

২০০২ সাল থেকে ১০ বছর আওয়ামী লীগের প্রথম পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বপালনকারী হাছান মাহমুদ এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বিট প্লাস্টিক পলুশন, ইকোসিস্টেম রিস্টোরেশন’ অনুসারে প্লাস্টিক দূষণ সমাধানে ব্রতী হওয়ার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘বছরে পৃথিবীতে ৪শ’ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক উৎপাদন হয় যার মধ্যে বাংলাদেশ প্রায় উৎপাদন হয় ৩ হাজার টন। বিশ্বব্যাপী ১১ মিলিয়ন টন প্লাস্টিক বর্জ্য সমুদ্রে নিক্ষেপ করা হয়। এ অবস্থা চললে বিশেষজ্ঞদের মতে ৫০ বছরে বিশ্বের অনেক জলাধার মৎস্যশূন্য হয়ে পড়বে।

‘থাইল্যান্ডের সমুদ্র অনেকটা মৎস্যশূন্য হয়ে গেছে। আবার প্রতিদিন প্রায় দেড়শ’ থেকে দুইশ’ প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় ১৩৭টি প্রজাতির প্রাণী বিলুপ্ত হচ্ছে বনভূমি উজাড় হওয়ার কারণে।’

পরিবেশের এসব বিপর্যয় রোধে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আসুন সবাই মিলে দেশ গড়ি, পরিবেশ রক্ষা করি ও প্রধানমন্ত্রীর হাতকে শক্তিশালী করি।’

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার, মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এবং সচিব ড. ফারহিনা আহমদ স্বাগত বক্তা হিসেবে বক্তৃতা দেন।

এসময় প্লাস্টিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে সতর্ক করে পরিবেশমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘প্লাস্টিক দূষণ রোধে দশ বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এছাড়া ২০৩০ সাল নাগাদ দেশে বৃক্ষাচ্ছাদিত ভূমির পরিমাণ বর্তমান ২২.৩৭% থেকে ২৫ শতাংশে এবং বনভূমির পরিমাণ ১৪.১% থেকে ১৬ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।’

উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এসময় পরিবেশ সংরক্ষণে সরকারের উদ্যোগের সাথে দেশব্যাপী সকলের অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

সাবের হোসেন চৌধুরী বিশ্বের সামনে পরিবেশগত তিনটি চ্যালেঞ্জের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘বর্তমান বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন, জীববৈচিত্র‍্য হারানো ও প্লাস্টিক বিস্ফোরণের অভিঘাত মোকাবিলা করছে। বাংলাদেশও এই অভিঘাতের বাইরে নয়। বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়কে এ ক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আমিনুজ্জামান, সালেহ রেজা ও বগুড়ার বাংলাদেশ বায়োডাইভার্সিটি কনজারভেশন ফেডারেশন সভাপতি ড. এস এম ইকবালকে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন-২০২২’ দেয়া হয়।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জীবানন্দ রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের উর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম মফিজুল ইসলাম, ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ও বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সোসাইটিকে (বেডস) দেয়া হয় জাতীয় পরিবেশ পদক-২০২২।

পাশাপাশি ৬টি শ্রেণিতে নির্বাচিত ১৮ জনকে বৃক্ষরোপণে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার-২০২১ এবং সামাজিক বনায়নে অংশগ্রহণকারী সর্বোচ্চ লভ্যাংশপ্রাপ্ত ৫ জন মহিলা ও ৫ জন পুরুষকে পুরস্কৃত করেন প্রধান অতিথি পরিবেশবিদ ড. হাছান মাহমুদ।

সভা শেষে তথ্যমন্ত্রী কনভেনশন সেন্টার সংলগ্ন শেরেবাংলা নগরে পরিবেশ মেলা, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষ মেলা উদ্বোধন করেন। এসময় অতিথিবৃন্দকে নিয়ে বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।

পরিবেশ মেলা ১১ জুন পর্যন্ত ও বৃক্ষমেলা প্রথমে ২৬ জুন পর্যন্ত এবং ঈদের পর ১ থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকছে।

এ বিভাগের আরো খবর