বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সময় এখন হাতপাখার

  •    
  • ৫ জুন, ২০২৩ ১৮:২৭

মেহেরপুরের ঐতিহ্যবাহী বামন্দী বাজার ঘুরে দেখা যায়, মৌসুমী পাখা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে হাতপাখা কিনতে মানুষ ভিড় জমিয়েছেন। সপ্তাহখানেক আগে যে হাতপাখা ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হতো বর্তমানে তা ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কৃষিনির্ভর মেহেরপুরে জৈষ্ঠ্য মাসের শেষ দশকে এসে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ আর ভ্যাপসা গরমে মানুষের জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত। সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। আর তা জনভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ।

গরম আর লোডশেডিংয়ে বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে আইপিএস ও চার্জার ফ্যানের। এ অবস্থায় বিদ্যুৎহীন দীর্ঘ সময়টাতে সাধারণ মানুষের একটাই ভরসা- হাতপাখা। তালপাতার তৈরি হাতপাখার ব‍্যবহার ও চাহিদা বেড়েছে দ্বিগুণ। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দামও।

মেহেরপুরের ঐতিহ্যবাহী বামন্দী বাজার ঘুরে দেখা যায়, মৌসুমী পাখা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে হাতপাখা কিনতে মানুষ ভিড় জমিয়েছেন। সপ্তাহখানেক আগে যে হাতপাখা ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হতো বর্তমানে তা ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পাখা ব‍্যবসায়ীরা বলছেন, তীব্র গরমে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে হাতপাখার ব‍্যবহার ও চাহিদা বেড়ে গেছে। চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ না থাকায় দামও বেড়ে গেছে।

সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, তীব‍্র গরমের মধ‍্যে একদিকে লোডশেডিং অন‍্যদিকে চার্জার ফ‍্যান ও হাতপাখার সংকট দেখা দিয়েছে। আর এই সংকটকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে হাতপাখার দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে।

গরম আর লোডশেডিংয়ে চাহিদা বাড়ায় ব্যস্ততা বেড়েছে পাখা প্রস্তুতকারীদেরও। ছবি: নিউজবাংলা

পাখা তৈরিকারক রেখা বালা বলেন, ‘আমরা গরমের মৌসুম আসার শুরুতেই পাখা বানানোর কাজ শুরু করি। বছরের অন‍্য সময়ে ঝুঁড়ি, সারা ও সরপোশ তৈরি করি। একটা পাখা তৈরি করে পাইকারি ৩৫/৪০ টাকায় বিক্রি করতাম। বর্তমানে বাজারে হাতপাখার চাহিদা বেশি। সে তুলনায় আমরা পাখা বানাতে পারছি না। বতর্মানে সেই পাখা পাইকারি বিক্রি করছি ৫৫/৬০ টাকা করে।’

গাংনী উপজেলার ষোলটাকা গ্রামের পাখা ব্যবসায়ী দ্বিপক জানান, গত এক সপ্তাহ ধরে তালপাতায় তৈরি হাতপাখার ব‍্যাচাহিদা বেড়েছে ব্যাপক।

তিনি বলেন, ‘এই হাতপাখা নিজে বাড়িতে তৈরি করলেও চাহিদা বিবেচনায় বাইরে থেকেও কেনা লাগছে। এই পাখা গত সপ্তাহে প্রতি পিস বিক্রি করেছি ৩৫/৪০ টাকা করে। আজ সেই পাখা অন‍্য জায়গা থেকে কিনে আনলাম ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। তাই গড়ে আমরা ৮০ টাকা পিস বিক্রি করছি। তবে এটা ঠিক যে কারেন্টের অবস্থা এমন থাকলে আগামী হাটে একশদ টাকা করে বিক্রি হবে।’

বামন্দী বাজারে পাখা কিনতে আসা ভ‍্যানচালক জামাল বলেন, ‘ওরে বাবা! রাস্তায় তো ভ‍্যান চালানোটাই কঠিন হয়ে গেছে। একোতে রাস্তায় গাছপালা কেটে ফাঁকা করে ফেলেছে। রাস্তায় ভ‍্যান চালানোর সময় হাতপাখা সাথে নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে।

‘আর পাখার যে দাম! প্রায় একশ টাকা কইরি হয়ে গেছে। গরিবরা যে জিনিসটাই বেশি ব‍্যবহার করবে, তারই দাম যেন বাড়তে হবে।’

একই উপজেলার মটমুড়া গ্রামের গৃহিণী শারমিন বলেন, ‘বাড়িতে আমার ১১ মাসের বাচ্চা। সারা দিনে সব মিলে দুই থেকে তিন ঘণ্টা কারেন্ট থাকে। রাতের বেলায়ও একই অবস্থা।

‘গরিব মানুষ, আমাদের তো আর আইপিএস কেনার সামর্থ্য নেই। আমাদের এসি বলেন আর আইপিএস বলেন সবই হাতপাখা। যতক্ষণ হাত ঘুরাবেন ততক্ষণ শরীর ঠাণ্ডা থাকবে। তাই রাতে আমাদের ঘুম নেই। রাত জেগে বাচ্চাকে হাতপাখা দিয়ে বাতাস করা লাগে।’

ইলেক্ট্রনিক্স সামগ্রী বিক্রেতা আতীয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার ঘরে গত বছরের বেশ কিছু চার্জার ফ‍্যান ছিল। সাথে এ বছরও ২শ’ পিস চার্জার ফ‍্যান কিনেছি। তারপরও ঘরে এক পিস ফ্যান নেই। বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে গত এক সপ্তাহে চার্জার ফ্যানের এমন চাহিদা বেড়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর