চট্টগ্রামে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু হত্যা মামলার পলাতক আসামি খাইরুল ইসলাম কালুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
শুক্রবার গভীর রাতে নগরীর আকবরশাহ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় পিবিআই। তবে গ্রেপ্তার কালুর পরিবারের অভিযোগ, একদিন আগেই (বৃহস্পতিবার) রাত ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তাকে নগরীর আকবরশাহ এলাকার বাসা থেকে তুলে নেয়া হয়।
খাইরুল ইসলাম কালু মিতু হত্যা মামলায় আদালতে পিবিআইয়ের জমা দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত আসামি।
কালুর ছোট ভাই মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘আমার ভাই দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে আকবরশাহ এলাকার বাসায় ছিলেন, তাকে সেখান থেকে বৃহস্পতিবার রাত ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জন লোক ডিবি পরিচয় দিয়ে মামলার কথা বলে নিয়ে গেছে।’
পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপার (এসপি, চট্টগ্রাম মেট্রো) নাঈমা সুলতানা বলেন, ‘এই মামলার তদন্ত শেষ যেহেতু, তাকে আমরা রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করেছি। তারা ইতোমধ্যে আদালত তুলেছে তাকে।’
একদিন আগে তুলে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে পরিবারের দাবি সঠিক না বলে জানান পুলিশ সুপার নাঈমা সুলতানা।
২০১৬ সালের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে নগরের জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু।
এ ঘটনায় জঙ্গিরা জড়িত দাবি করে বাবুল আক্তার মামলা করেন পাঁচলাইশ থানায়। তদন্ত শেষে পিবিআই গত বছরের ১২ মে এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়।
হত্যায় ‘বাবুল জড়িত’ বলে সন্দেহ হলে একই দিন মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন আরেকটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় বাবুলসহ আটজনকে আসামি করা হয়। পুলিশ এ মামলায় বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখায়।
বাবুলের করা মামলায় পিবিআইয়ের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৪ অক্টোবর আদালতে নারাজি দেন বাবুলের আইনজীবী। আদালত ৩ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি গ্রহণ না করে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেয়। পরে আদালত বাবুলকে নিজের করা মামলাতেই গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয়।
এর মধ্যে চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি পিবিআই মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এতে ওই মামলায় গ্রেপ্তার আসামি বাবুলসহ অন্যদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়। মামলাটিতে পাওয়া সব তথ্য-উপাত্ত বাবুল আক্তারের করা মামলায় একীভূত করতেও আবেদন জানানো হয়।
পিবিআইয়ের অধিকতর তদন্তে বাবুল আক্তারের করা মামলায় তাকেই আসামি করা হয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পিবিআই।
গত ৯ এপ্রিল এই মামলায় বাবুলসহ অন্যান্য আসামিদের বিচার শুরু হয়। বর্তমানে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে এই মামলায়।