২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বাইসাইকেলের ওপর নতুন করে কর আরোপের কথা বলা হয়েছে। এতে বাহনটি মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছে কয়েকটি সংগঠন।
তারা বলছে, দাম বাড়লে দেশের বড় একটি জনগোষ্ঠী বাইসাইকেল কেনার সামর্থ্য হারাবে। এতে বাহনটির ব্যবহার কমে যাবে। বাসের মতো গণপরিবহনে চাপ বাড়বে। যাত্রীদের খরচ বাড়বে। পরিবেশের ক্ষতি হবে।
ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মধ্যবিত্তের দৈনন্দিন যাতায়াতে বাইসাইকেল হতে পারত একটি ভাল সমাধান। কিন্তু আমাদের রাজস্ব নীতির কারণে সাশ্রয়ী পরিবেশবান্ধব বাহন বাইসাইকেলের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে।
আগে থেকেই বাইসাইকেল তৈরির খুচরা যন্ত্রাংশের ওপর শতকরা ৫৮ শতাংশ কর আরোপ এবং বর্তমানে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন করে মূল্য সংযোজন কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়।
এ করের কারণে বাইসাইকেলের দাম অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাবে।
গ্রীণ পেইজের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘সাইকেল ব্যবহার যত বাড়বে, গণপরিবহন যেমন বাস, রিকশার মতো বাহনগুলোতে চাপ তত কমবে। ফলে নারী, শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা গণপরিবহনে আরও স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে পারবে। সর্বপরি আমাদের গণপরিবহন ব্যবস্থায় শৃঙ্খলা ফিরে আসবে, এতে করে সাইক্লিস্টরাও সহজে সাইকেলে যাতায়াত করার সুবিধা পাবে।’
ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষ এম. এ. মান্নান মনির বলেন, ‘অতি উচ্চহারে কর আরোপের কারণে মানুষ এখন আর সাইকেল কিনতে পারছে না। ফলে ব্যায়ামের সুযোগ হতে বঞ্চিত হচ্ছে এবং অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তাই অবিলম্বে সাইকেলের খুচরা যন্ত্রাংশের ওপর আরোপিত কর হ্রাস করার মাধ্যমে এই বাহনটিকে সাধারণ মানুষের নাগালে নিয়ে আসুন।’
কর কমাতে র্যালি
এদিকে বাইসাইকেল তৈরির খুচরা যন্ত্রাংশের ওপর আরোপিত কর হ্রাসের মাধ্যমে পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ, সাশ্রয়ী বাহনটিকে সবার ক্রয় সীমার মধ্যে নিয়ে আসার দাবিতে শুক্রবার র্যালি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।
এতে ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ, স্কেটিং ৭১, কারফ্রি সিটিস এলায়েন্স বাংলাদেশ, ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, ধানমন্ডি ট্যুরিস্ট সাইক্লিস্ট, সূর্য শিশির, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ, গ্রীণ পেইজ, ইসলামিক ইউনিভাসির্টি অব টেকনোলজি, ব্র্যাক ইউনিভাসির্টি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ র্যালিতে অংশ নেন।
ঢাকার শংকর বাসস্ট্যান্ড থেকে র্যালিটি শুরু হয়ে জিগাতলা, সাইন্সল্যাব, নিউমার্কেট, নীলক্ষেত মোড়, জাতীয় শহীদ মিনার হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এসে শেষ হয়।
র্যালিতে শতাধিক সাইক্লিস্ট অংশ নেন।
বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি আমিনুল ইসলাম টুব্বুস বলেন, ‘দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে মানুষ অনেক কষ্টে আছে। প্রতিদিন যাতায়াতে অনেক টাকা খরচ করতে হচ্ছে। সাইকেল ব্যবহার করে মানুষ প্রতিদিন অনেক অর্থ সাশ্রয় করতে পারত। এ পরিস্থিতিতে সাইকেলের ওপর কর হ্রাস এবং সাইকেল লেন বাস্তবায়ন করা সময়ের দাবি।’