ভিক্ষার টাকা জড়ো করে বিএনপি সরকার বাজেট উপস্থাপন করত বলে মন্ত্রব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
শুক্রবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার মোগড়া ইউনিয়ন ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘২০০৬ সালে বিএনপির সর্বশেষ বাজেট অধিবেশনে ৬৩ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি বাজেট উপস্থাপন করেছিল। আর আওয়ামী লীগ সরকার গতকাল ৭ লক্ষ ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব দিয়েছে।
‘বিএনপি সরকারের সময় বড় বড় রাষ্ট্রগুলো বলত, আপনাদের আমরা কত টাকা ভিক্ষা দেবো? সেই ভিক্ষার টাকা জড়ো করে বিএনপি সরকার বাজেট উপস্থাপন করত। বাজেট অধিবেশনে তারা উপস্থাপন করত- এ বাজেটের ৮০ শতাংশ টাকা দেবে বাইরের দেশের লোক।’
মন্ত্রী বলেন, ‘তবে আজ সেই চিত্র পাল্টে গেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ৭ লক্ষ ৬১ হাজার টাকার বাজেট দেয়ার পরও আমরা বলতে পারি, বাজেটের ৮৩ শতাংশ টাকাই দেবে বাংলাদেশের জনগণ। আর মাত্র ১৭ শতাংশ টাকা আসবে দেশের বাইরে থেকে।’
প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দেশের দারিদ্র্যসীমা কমে আসার বিষয়টি উঠে এসেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘চাকরিপ্রার্থীদের সংখ্যাও কমে আসছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালে বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চান। বাংলাদেশের মানুষ নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে শিখেছে। বাংলাদেশের মানুষকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না।’
এ সময় আনিসুল হক বলেন, ‘১৯৮১ সালে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফিরে আসার পর দলকে সংগঠিত করেন। নির্বাচনে জয়ী হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে যুদ্ধ শুরু করেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে, পদ্মা সেতু হয়েছে। শেখ হাসিনার উন্নয়ন এখন গ্রাম-মহল্লা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।’
বাংলাদেশের উন্নতি কারও কারও ভালো লাগছে না মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি বাংলদেশটাকে লুটপাট করে শেষ করে দিয়েছিল। বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি প্রমাণ করে দিয়েছিল। বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র করার সব সরঞ্জাম তৈরি করে ফেলেছিল। তারা উন্নয়ন দেখতে পায় না। বিএনপির চোখ থাকতেও অন্ধ।
‘এখন আবার কিছু ষড়যন্ত্রকারী তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রকারীদের কথা আপনাদের মনে রাখতে হবে। তার কারণ এই ষড়যন্ত্রকারীরা আপনাদের এক টাকার সুবিধা দিয়ে ৫০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে যার ৪০ শতাংশ বাংলাদেশের মানুষকে শোধ দিতে হয়েছে। যেখানে শেখ হাসিনা ১০ টাকায় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করার সুযোগ দিয়েছেন; প্রথমে কৃষকদের বিনা সুদে, তারপর ৪ টাকা সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন; যেখানে তিনি গৃহায়ণ প্রকল্প তৈরি করে দিয়েছেন, যেন কোনো মানুষ গৃহহীন না থাকে। মনে রাখবেন, আপনাদের ভাগ্য নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেবেন না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা খর্ব করার চেষ্টা যারা করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকেই লড়াই করতে হবে।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘করোনাভাইরাস ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, এই দুটির কারণে সারা বিশ্ব টালমাটাল হয়ে গেছে। তারপরও বাংলাদেশ সরকার চেষ্টা করছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। সারের দাম কমে এসেছে, পেট্রলেরও দাম কমে আসবে। সব কিছুর দাম কমানো হবে।’
মোগড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুজ্জামান নূরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বারের পিপি মাহবুবুল আল খোকন, আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সম্মেলন উদ্বোধন করেন মোগড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক এমরামুল বার শিশির।