বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

প্রশান্তির মাটির ঘর

  •    
  • ৩১ মে, ২০২৩ ১৩:১৮

হারিসাংগান গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী ছিদ্দিকুর রহমান ছিদ্দিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইট-পাথরের তৈরি বিল্ডিংয়ের মেয়াদ আছে, তবে আমাদের মাটির ঘরের কোনো মেয়াদ নাই।’ 

নরসিংদীর বেলাব উপজেলার হাড়িসাংগান গ্রামের ‘প্রফেসর হাউজ’ নামের বাড়িতে দেখা মিলবে চারটি মাটির ঘর। এগুলোর বয়স প্রায় ১৫০ বছর। ইটের প্রাচীরওয়ালা বাড়ির ভেতরে মাটির ঘরগুলো যেন ছবির মতো।

ঘরগুলোর একটিতে রয়েছে অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা। আরেকটি ঘর লেখাপড়ার জন্য। বাকি দুটি পারিবারিক কাজে ব্যবহার হয়।

মাটির ঘর নিয়ে কথা হয় হারিসাংগান গ্রামের ৬৫ বছর বয়সী ছিদ্দিকুর রহমান ছিদ্দিকের সঙ্গে। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ইট-পাথরের তৈরি বিল্ডিংয়ের মেয়াদ আছে, তবে আমাদের মাটির ঘরের কোনো মেয়াদ নাই।’

তিনি বলেন, ‘গরমের সময় গরম লাগে না। শীতের সময় শীত লাগে না। মাটির ঘরে থাকা খুবই আরামদায়ক। টিনের চাল দিয়ে দুই কক্ষবিশিষ্ট একটি মাটির ঘর নির্মাণের খরচ দেড় লক্ষ টাকা ছাড়িয়ে যায়।’

হারিসাংগান গ্রামের ৫৫ বছর বয়সী মাটির ঘর নির্মাণশ্রমিক সিরাজ মিয়া বলেন, ‘আমরা যেসব মাটির ঘর নির্মাণ করেছি, তা ইটের ঘরের চেয়ে পাকাপোক্ত। এই ঘরগুলো ভূমিকম্প হলেও ভেঙে পড়ে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদার জন্মের আগ থেকেই মাটির ঘরের প্রচলন ছিল এই গ্রামে। জমি থেকে এঁটেল মাটি সংগ্রহ করে, সিমেন্ট যেভাবে গুলিয়ে নেয়া হয়, ঠিক সেভাবে মাটিগুলো কাদায় পরিণত করা হয়।

‘প্রথমে নিচের অংশে তিন ফুট চওড়া করে দুই ফুট চওড়া দেয়াল তৈরি করা হয়। ১২ ফুট উঁচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করা হয়। তার ওপর টিনের ছাউনি দেয়া হয়। মাটির ঘর তৈরি করতে কারিগরদের তিন-চার মাসের বেশি সময় লাগে। এ ছাড়া কিছু স্থানে দোতলা পর্যন্ত মাটির ঘর নির্মাণ করেছি আমরা।’

ঘরগুলোর মালিক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হাড়িসাংগান গ্রাম বাংলাদেশের মাঝে একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রাম। এই গ্রামে একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে, যা লেখাপড়ায় বছরের বছর ধরে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রেখেছে।’

মাটির ঘরের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের মাটির ঘর গরিবের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘর বলে পরিচিত। এ ঘর শীত ও গরম মৌসুমে আরামদায়ক। তাই আরামের জন্য গ্রামের দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি অনেক বিত্তবান মানুষ মাটির ঘর তৈরি করে থাকছেন হাড়িসাংগান গ্রামসহ অন্যান্য গ্রামে।’

এ বিভাগের আরো খবর