চট্টগ্রামের ভুজপুরে সাবেক স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টার সময় বাধা দেয়ায় শ্যালিকাকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ভগ্নিপতিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
রাউজানের নোয়াপাড়া থেকে শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শনিবার বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান র্যাব-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নুরুল আবছার।
গ্রেপ্তার ৩২ বছর বয়সী মো. শাহ পরান ভুজপুর থানার পূর্ব হাসনাবাদ এলাকার বাসিন্দা।
র্যাব জানায়, ২০১০ সালের জানুয়ারিতে নিহতের বড় বোন দেলোয়ারা বেগমের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী গ্রামের শাহ পরানের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করতেন শাহ পরান। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বিয়ের কিছুদিনের মধ্যে স্বামীকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান দেলোয়ারা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দেলোয়ারাকে হত্যার হুমকি দেয় তার সাবেক স্বামী।
এরপর একই বছরের ১ এপ্রিল ভোর চারটার দিকে ভগ্নিপতি নাসির ওরফে নাসিমকে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ঢুকে স্ত্রী দেলোয়ারাকে ছুরিকাঘাত করেন শাহ পরান। এসময় তার চিৎকারে ছোট বোন ফারহানা ইয়াছমিন ওরফে রিকা মনি ও তার মা জেগে ওঠে শাহ পরানকে বাধা দিলে রিকা মনিকেও ছুরিকাঘাত করেন শাহ পরান। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রিকা মনি ৷ এসময় রিকার মার ও দেলোয়ারা বেগমের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে হাতে থাকা চুরি ও একটি ব্লেড রেখে পালিয়ে যান শাহ পরান ও তার ভগ্নিপতি। পরবর্তীতে প্রতিবেশীরা দেলোয়ারা বেগমকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে শাহ পরান ও তার ভগ্নিপতি নাসিরকে আসামি করে ভুজপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে শাহ পরানকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও জামিনে বের হয়ে পলাতক থাকেন। এরমধ্যে ২০১৯ সালের ৯ এপ্রিল এই মামলায় শাহ পরানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় আদালত।
র্যাব-৭ এর জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) নুরুল আবছার বলেন, ‘মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত ওই আসামিকে গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়। একপর্যায়ে তার অবস্থান শনাক্ত করে রাউজানের নোয়াপাড়ায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ওই মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি তা স্বীকার করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রেপ্তার শাহ পরানকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’