গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে পাশে নিয়ে কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন নবনির্বাচিত মেয়র জায়েদা খাতুন। একই সঙ্গে নগরের উন্নয়নে সাবেক মেয়র ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নেবেন তিনি।
শুক্রবার বিকেলে নগরীর ছয়দানার নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানান স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে এই সিটিতে নির্বাচনে লড়ে জয় পাওয়া জায়েদা খাতুন।
তিনি বলেন, ‘যে পরাজিত হয়েছে তাকে (আজমত) আমি সঙ্গে নিয়ে, তার এলাকার লোকজনকে নিয়ে সমন্বয় করে কাজ করব। আমার ছেলেসহ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এক সঙ্গে মিলেমিশে কাজ করব।’
নগরীর রাস্তা, ড্রেন ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ শুরু করবেন জানিয়ে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘একটা শহর সাজাতে গেলে প্রথমে রাস্তা, ড্রেন, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। আমি সে কাজগুলো প্রথমে করব। সিটি করপোরেশনের যে কাজগুলো বাকি আছে, আমার ছেলে আগে যা করেছে, যা বাকি আছে, সে কাজগুলো বুঝেশুনে করব।’
‘রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকলেও হঠাৎ করে রাজনীতিতে এসেই মেয়র নির্বাচিত হলেন। আপনার অনুভুতি কেমন?’
উল্লিখিত প্রশ্নের উত্তরে জায়েদা বলেন, ‘আমি কখনও রাজনীতিতে জড়িত হই নাই, আবার হয়েছিও। আমার ছেলে যে সমস্ত কাজ করেছে, সে সমস্ত কাজ আমি দেখেছি। আমি এই এলাকারই মেয়ে। রাস্তাঘাট, ড্রেন, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা-এতিমখানা এসব নিয়ে আমার ছেলে কাজ করেছে।
‘আমি সেগুলো দেখছি, জানছি, বুঝছি। আমার ছেলে কাজগুলো শেষ করতে পারে নাই। কাজটা থেমে গেল। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে হয়রানি করা হলো। সে কারণে আমি ভোটে এসেছি।’
ছেলেকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে চান জানিয়ে জায়েদা খাতুন বলেন, ‘আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হাজির হব।’
ভোট সুষ্ঠু হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নির্বাচন কমিশন ও ভোটারদের ধন্যবাদ ও তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান দেশের দ্বিতীয় নারী মেয়র জায়েদা খাতুন।
এদিকে সকাল থেকেই মহানগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছয়দানার বাসভবনে কর্মী, সমর্থক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ফুলের তোড়া, মালা হাতে নিয়ে মিছিল নিয়ে জায়েদা খাতুনকে অভিনন্দন জানাতে আসেন।
ওই সময় কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার মা মানে আপনাদের মা। আমার বাড়িঘর সবার জন্য উম্মুক্ত। যেকোনো সময়, যেকোনো প্রয়োজনে আপনারা আসবেন। আমার মা এবং আমি আপনাদের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করব। সবার জন্য এ শহর।
‘আমরা কারও সঙ্গে দ্বন্দ্ব চাই না। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী যেহেতু আছেন, উনার কাছ থেকে ন্যায়বিচার পাওয়া শুরু হয়েছে। অনেকে বিভিন্নভাবে পাঁয়তারা করেছিল, মিথ্যা বলেছিল এ শহর ধ্বংস করার জন্য।’
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের হয়রানি করা হচ্ছে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। কাউকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে দেখা যাবে না। কারণ যারা শহরের মেয়র বানাতে পারে, তারা এই সমাজে সবকিছু প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। পেশীশক্তি দিয়ে মানুষের মন জয় করা যায় না।’
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘ওয়ার্ড, থানা এবং মহানগরের সবাইকে নিয়ে পঞ্চায়েত পদ্ধতি করে শাসন ব্যবস্থা এবং সিটি করপোরেশনের কাজগুলো যেন মানুষ সহজে করতে পারে, মাকে সঙ্গে নিয়ে সে কাজটা করে দেব।’