আগামী ৭ জুনের মধ্যে চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সংস্কার করা না হলে ৮ জুন থেকে চট্টগ্রামের দক্ষিণ অঞ্চলে পরিবহন বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
বৃহস্পতিবার বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল সংস্কারের দাবিতে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে এ ঘোষণা দেন চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ মুছা।
সমাবেশের কারণে আজ বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দক্ষিণ চট্টগ্রামমুখি বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পূর্বাঞ্চল কমিটির (চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ) সভাপতি বাবু মৃণাল চৌধুরী বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে বহুমুখী সমস্যায় নিমজ্জিত হয়ে বর্তমানে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে বহদ্দারহাট আঞ্চলিক বাস টার্মিনাল। এ কারণে শ্রমিক-যাত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই প্রতিনিয়ত সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এ অবস্থায় দ্রুত বাস টার্মিনাল সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ না করলে পরিবহন বন্ধসহ কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।’
সমাবেশের প্রধান বক্তা চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মোহাম্মদ মুছা বলেন, ‘বাস টার্মিনাল সংস্কারের জন্য সিডিএ-কে আমরা বার বার তাগাদা দেয়ার পরও তারা নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। ফলে আমাদের পিট এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। আন্দোলন ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।
‘বহদ্দারহাট বাস টার্মিনালে ক্ষত-বিক্ষত অবস্থা বিরাজ করছে। একটু বৃষ্টি হলেই হাঁটু পরিমাণ পানি জমে গিয়ে পুকুরসম গর্তে পড়ে গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। গাড়ি দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে প্রতিদিন। এতে পরিবহন শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ইজারাদার নিয়মিত ইজারার টাকা আদায় করা সত্ত্বেও টার্মিনালে কোনো আলোর ব্যবস্থা করেনি, পাহারাদার নেই, সিসি ক্যামেরা বসানো হয়নি, প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থাও নেই। টার্মিনালের একমাত্র পুলিশ ফাঁড়ি সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এ কারণে বর্তমানে বহিরাগতদের অবাধ বিচরণ, মাদক সেবনসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
‘বাস টার্মিনালের সংস্কারসহ বিদ্যমান নানা সমস্যা ৭ জুনের মধ্যে নিরসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা না হলে ৮ জুন ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পুরো দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, টেকনাফ, বান্দরবানে পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিতে আমরা বাধ্য হবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটি স্বার্থন্বেষী চিহ্নিত মহল টার্মিনাল ও সড়কের শৃঙ্খলা নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। তাদের স্বার্থে আঘাত আসলেই তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা করে। তাই সময় থাকতে সতর্ক না হলে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেয়ার জন্য আমাদেরকে প্রস্তুত থাকতে হবে।’
যৌথভাবে সমাবেশ সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম ও আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াছিন।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের (কাপ্তাই) সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম, আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জহিরুল ইসলাম, বাস টার্মিনাল শ্রমিক কমিটির সম্পাদক ও চট্টগ্রাম পশ্চিম পটিয়া আনোয়ারা বাঁশখালী সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাহিন, চট্টগ্রাম পটিয়া আনোয়ারা বাঁশখালী সাতকানিয়া চকরিয়া সড়ক পরিবহন যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়নের আহবায়ক মোহাম্মদ হোসেন, চট্টগ্রাম বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল শ্রমিক পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. নুরুল কবির, বান্দরবান কেরানীহাট চট্টগ্রাম শৈলশোভা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সিনিয়ার সহ-সভাপতি সাজেদুল ইসলাম মুন্সী প্রমুখ।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন বাস মিনিবাস ওয়ার্কাস ইউনিয়ন (কাপ্তাই), চট্টগ্রাম পশ্চিম পটিয়া আনোয়ারা বাঁশখালী সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন, চট্টগ্রাম পটিয়া আনোয়ারা বাঁশখালী সাতকানিয়া চকরিয়া সড়ক পরিবহন যানবাহন শ্রমিক ইউনিয়ন ও বান্দরবান কেরানীহাট চট্টগ্রাম শৈলশোভা সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।