বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশিদের সঙ্গে নিয়ে ২ নাইজেরিয়ানের পার্সেল ফাঁদ

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৫ মে, ২০২৩ ১৯:৩৮

র‌্যাবের অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘গ্রেপ্তার চার্লস ২০১৯ সালে ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে আসেন। মাদক মামলায় পলাতক অবস্থায় কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন তিনি। চার্লসই এ আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের মূল হোতা।’

বিদেশ থেকে মূল্যবান পার্সেল পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাত করে আসছিল একটি চক্র। র‌্যাবে অভিযানে রাজধানী ঢাকা থেকে ওই চক্রটির চার সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন। এদের মধ্যে নাইজেরিয়ার দুই নাগরিকও রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

বুধবার র‌্যাব-১০-এর একটি দল রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে চার্লস ইফানাডি উডেজে (CHARLES IFENNADE UDEZUE) ও ফ্রাঙ্ক কোকো ওবিয়ের্ক্স (FRANK COCO OBIERKS) নাইজেরিয়ার নাগরিক এবং শফি মোল্লা ও মৌসুমি খাতুন বাংলাদেশি।

গ্রেপ্তারকালে তাদের কাছ থেকে ১টি মোটরসাইকেল ও ৮টি মোবাইল সেটসহ প্রতারণায় ব্যবহৃত ভুয়া ইনভয়েস (চালান) উদ্ধার করেছে র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র‌্যাব-১০-এর অধিনায়ক অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান এলাকার এক নারীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে বিদেশি এক ব্যক্তির পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে ওই ব্যক্তি ১৭ মে নারীর ঠিকানায় একটি পার্সেল পাঠিয়েছেন জানিয়ে এয়ারপোর্ট থেকে তা সংগ্রহ করতে বলেন।

‘১৮ মে ওই নারী হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গেলে কাস্টমসের পরিচয় দিয়ে অজ্ঞাতনামা এক নারী তাকে জানান, তার নামে একটি অতি মূল্যবান পার্সেল এসেছে। পার্সেলটি ডেলিভারি করতে কাস্টমস চার্জ হিসেবে ৬০ হাজার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে বলেন তিনি।’

ডিআইজি ফরিদ উদ্দিন আরও বলেন, ‘অজ্ঞাতনামা নারীর কথা অনুযায়ী ভুক্তভোগী ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ৩৫ হাজার টাকা দেন। এরপর ওই নারী পুনরায় ভুক্তভোগীকে সিকিউরিটি বাবদ আরও ৩০ হাজার টাকা জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিতে থাকেন। ভুক্তভোগী তার কথা অনুযায়ী আগের অ্যাকাউন্টে আরও ৩০ হাজার টাকা পাঠান।

‘পরে পার্সেলর জন্য ভুক্তভোগী মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে ওই নারী জানান, পার্সেল তার বাসায় পৌঁছে যাবে। সে সঙ্গে উল্টাপাল্টা কথা বলে আরও ৮ হাজার ৩২০ টাকা বিকাশের মধ্যমে পাঠানোর জন্য বললে ভুক্তভোগীর সন্দেহ হয়। এরপর তিনি আত্মীয়দের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে র‌্যাবের কাছে অভিযোগ করেন।’

র‌্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া আইডি খুলে বিভিন্ন প্রোফাইল ঘেটে ঘেটে ব্যবসায়ী, চাকরিজীবী ও উচ্চবিত্তসহ সহজ-সরল মানুষদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতেন। টার্গেটের কাছে উন্নত দেশের ধনী ব্যক্তি হিসেবে নিজের পরিচয় দিয়ে তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যমে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতেন।

সম্পর্ক গভীর করার জন্য প্রতারক এক পর্যায়ে উপহার পাঠাতে চান। উপহারের মিথ্যা নাটক তৈরি করে প্রতারক চক্রের এক সদস্য কাস্টমস অফিসার সেজে ভুক্তভোগীকে ফোন করেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী বন্ধুত্বের মান রাখতে পার্সেল গ্রহণ করার জন্য প্রতারক চক্রটির জালে ধরা পড়ে অর্থ খোয়ায়।

যেভাবে গড়ে ওঠে প্রতারক চক্রটি

অ্যাডিশনাল ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘গ্রেপ্তার চার্লস ২০১৯ সালে ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে আসেন। মাদক মামলায় তার পাসপোর্ট আদালতে জব্দ রয়েছে বলে জানা গেছে। পরবর্তীতে তিনি পলাতক অবস্থায় কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন। তিনিই এই আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্রের মূল হোতা।

‘গ্রেপ্তার ফ্রাঙ্ক ২০২১ সালে ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে আসার পর চার্লসের সঙ্গে পরিচয়ে হয়। পরবর্তীতে চার্লসের সঙ্গে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করেন এবং নিজেকে গার্মেন্টস ব্যবসায়ী বলে পরিচয় দেন ফ্রাঙ্ক।’

ফ্রাঙ্ক চার্লসের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছিলেন বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, ‘ফ্রাঙ্ক ও চার্লস বঙ্গবাজারের শফি মোল্লার কাছ থেকে কাপড় কিনে নাইজেরিয়াতে রপ্তানি করত। ব্যবসার আড়ালে শফি মোল্লা প্রতারক চক্রটির বাংলাদেশি সহযোগী হিসেবে কাজ করত।

‘গ্রেপ্তার মৌসুমি খাতুন ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে ছিলেন। সেখানে কাজ করার সুবাদে তিনি ইংরেজি ও আরবি ভাষায় পারদর্শী। দেশে ফিরে জীবিকা নির্বাহের জন্য বঙ্গবাজারসহ বিভিন্ন গার্মেন্টসে দোভাষীর কাজ করতেন তিনি। এক পর্যায়ে এ প্রতারক চক্রের সঙ্গে পরিচয় হয় মৌসুমির। বাংলাদেশে চক্রটির প্রধান সহযোগী তিনি।’

এ বিভাগের আরো খবর