দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে সকলের সমন্বিতভাবে কাজ করার তাগিদ জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে রয়েছে। এই ঝুঁকি নিরসনে আমাদের সম্মন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। অনেক টেকনিক ব্যবহার করতে হবে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে স্ট্রেংদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স’ সুপার (সুপার) কনসোর্টিয়াম প্রকল্প আয়োজিত দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বিষয়ক আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে সবচেয়ে বড় কাজটি হয়েছে সিপিপি গঠন। যেটা ছিল পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপের মতো একটি ধারণা। যা সারা বিশ্বে অনুকরণীয় মডেল হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে এবং সাইক্লোনের মতো দূর্যোগ ব্যস্থাপনায় বড় সক্ষমতা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকায় জ্বলাশয় ভড়াট করে বিল্ডিং তৈরি করা হচ্ছে। প্রতিবছর ১ লাখ ভবন তৈরি হচ্ছে। কোন নিয়ম-নীতি মানা হচ্ছে না। এতে এই শহর বিপদের মুখে পড়ছে। তাই আমাদের আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে ভাবতে হবে। এই কর্মশালায় সুপার প্রকল্প দুর্যোগ ঝুঁকি নিরসনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারে কাজ করেছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা আগুনের খবর খুব দ্রুত পেয়ে যাবো।’
সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আ ম নাসির উদ্দিন বলেন, স্ট্রেংদেনিং আরবান পাবলিক-প্রাইভেট প্রোগ্রামিং ফর আর্থকোয়েক রেজিলিয়েন্স' সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্প, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি কৃত্রিক বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক সমাধান কল্ল্যাণপুর বস্তিতে পরীক্ষামূলকভাবে স্থাপন করেছে। যা আগুন এবং জলাবদ্ধতা সংক্রান্ত দুর্যোগ ঝুঁকির আগাম পূর্বাভাস দিতে সক্ষম। ফলে, দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি রোধ অনেকাংশে সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলে ফায়ার সার্ভিস আসতে আসতে ১৫-২০ মিনিট লেগে যাচ্ছে। আমাদের এই প্রযুক্তির মাধ্যমে দুর্যোগের ১০ সেকেন্ডের মধ্যে খবর পেয়ে যাবো। এতে দুর্যোগ ঝুঁকির প্রথমেই যেনে গেলে খুব সহজেই আমরা মোকাবেলা করতে পারবো।’
কর্মশালায় আরো উপস্থিত ছিলেন ডিজি একো বাংলাদেশের হেড অব অফিসের আন্না অরলান্ডি, ফায়ার সারভিস এবং সিভিল ডিফেন্স এর সাবেক মহাপরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল ইঞ্জি. আলি আহমদ খান, ঢাকা ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর শ্রীরামাপ্পা গঞ্চিকারা, ইউনাইটেড পারপাস বাংলাদেশের দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা ও জরুরি সাড়াদান ইউনিটের প্রধান মাসুদ রানা, সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পের ব্যবস্থাপক আ ম নাসির উদ্দিন ও ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও প্রকৌশল বিভাগের প্রফেসর মোহাম্মদ কায়কোবাদ।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিভিল প্রটেকশন এন্ড হিউমেনিটেরিয়ান এইড (একো) এর অর্থায়নে জনসাধারণ এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মাঝে দুর্যোগে সহনশীলতা গড়ে তোলার জন্য ‘সুপার কনসোর্টিয়াম প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে অ্যাকশনএইড, ঢাকা চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই), ইউনাইটেড পারপাস এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন। এই প্রকল্পে কৌশলগত সহায়তাকারী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দফতর (ইউএনআরসিও)।