বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ, ডিসির অপসারণ দাবি

  • প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ   
  • ২৫ মে, ২০২৩ ১৯:৩৭

ইডিসিএল-এর একটি প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে ২৩ মে একাধিক সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। তাতে বলা হয়, জমির দাম আগে থেকে বাড়িয়ে দেয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিবার এর সুফল পাবে। আর এ কাজে সরকারের বেশি অর্থ ব্যয় হবে বলে সই করছেন না মানিকগঞ্জের ডিসি।

মানিকগঞ্জে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনামন্ত্রী জাহিদ মালেক ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের জেরে জেলা প্রশাসকের অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন করেছে দলটির নেতাকর্মীরা।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেন আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। মানববন্ধন ও বিক্ষোভ চলাকালে শহরের প্রধান শহীদ রফিক সড়কে পথচারী ও যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

২৩ মে দেশের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিকসহ একাধিক অনলাইন নিউজ পোর্টালে এসেনসিয়াল ড্রাগ কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) একটি প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ নিয়ে খবর প্রকাশ হয়। ওই খবরে বলা হয়, জমির দাম আগে থেকে বাড়িয়ে দেয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিবার এর সুফল পাবে। আর এ কাজে সরকারের বেশি অর্থ ব্যয় হবে বলে সই করছেন না মানিকগঞ্জের ডিসি।

এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের মামাতো ভাই ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইস্রাফিল হোসেন বলেন, ‘জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ প্রস্তাবিত রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইডিসিএল প্ল্যান্ট স্থাপনে বাধা দিয়েছেন। তিনি একটি পত্রিকায় ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদের প্রকাশ করিয়েছেন।

‘তিনি মানিকগঞ্জ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের উন্নয়ন কাজের বাধা সৃষ্টি করে আসছেন। জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে নানা টালবাহানা করে উন্নয়ন কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছেন। আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসক মিথ্যা তথ্য ও অশালীন বক্তব্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়েছেন।’

জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফের অপসারণ চেয়ে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মানববন্ধনের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।

সূত্র জানায়, রাজধানী ঢাকার তেজগাঁওয়ে অবস্থিত ইডিসিএলের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মানিকগঞ্জে সরিয়ে নিতে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। প্রকল্পটি স্থাপনের জন্য মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নের ৮৪ নম্বর মেঘশিমুল মৌজায় ৩১.৫ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব হয়। সে সঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তায়নের জন্য জমি অধিগ্রহণের লক্ষ্যে ২৭ ডিসেম্বর সম্ভাব্যতা যাচাই এবং ১৭ জানুয়ারি জেলা ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে জমির শ্রেণির পরিবর্তনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এরপর ২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি নিবন্ধন মহাপরিদর্শকের দপ্তর থেকে ৮৪ নম্বর মেঘশিমুল মৌজার নাল জমির শ্রেণি পরিবর্তন সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয়।

প্রশাসন জানায়, জেলা ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত ও সরকারি কাগজপত্র অনুযায়ী প্রস্তাবিত ভূমি নাল শ্রেণির ভূমির অর্ন্তভুক্ত ছিল। কিন্তু সম্প্রতি বালু ভরাট করে তৎকালীন অসাধু ভূমি কর্মকর্তার যোগসাজশে জমিটি শ্রেণি ‘ভিটি’তে পরিবর্তন করা হয়েছে। সে সঙ্গে ৮৪ নম্বর মেঘশিমুল মৌজার জমির মূল্যও পরিবর্তন করা হয়েছে। ওই মৌজার ভিটি বা বাড়ি শ্রেণির প্রতি শতক জমির সরকারি মূল্য ২৫ হাজার টাকা হলেও পরে তা শতকপ্রতি ১ লাখ ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ কাজগুলো করা হয়েছে বলে জানায় স্থানীয় প্রশাসন।

এ বিষয়ে সূত্র আরও জানায়, জেলা ভূমি বরাদ্দ কমিটির সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় চিঠি পাঠানো হয়।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ইডিসিএল প্ল্যান্ট স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নের ৮৪ নম্বর মেঘশিমুল মৌজায় ৩১.৫ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব পাওয়া গেছে। প্রস্তাবিত জমি অধিগ্রহণে সরকারের খরচ হবে ১১৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকা। অথচ জমির প্রকৃত শ্রেণি নাল হিসেবে অধিগ্রহণ করা হলে খরচ হবে মাত্র ৬৩ কোটি ৭৭ লক্ষ ৭১ হাজার ৫০ টাকা। কারণ আশপাশের মৌজার সমশ্রেণির জমির মূল্য অনেক কম।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা ভূমি বরাদ্দ কমিটির একাধিক ব্যক্তি বলেন, ‘ইডিসিএলের প্ল্যান্ট মানিকগঞ্জে হস্তান্তর হবে, সেটি বুঝতে পেরে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পরিবার ও নিকটাত্মীয়রা কয়েক বছর আগে থেকেই মেঘশিমুল এলাকায় জমি কেনা শুরু করে দেয়। বতর্মানে মেঘশিমুল এলাকার প্রায় সব জমিই মন্ত্রীর আত্মীয়-স্বজনদের দখলে। ইডিসিএলের প্ল্যান্টের জন্য ওই জমি অধিগ্রহণ করা হলে সরকারের প্রায় ৭০ থেকে ১০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে।’

২৩ মে একটি জাতীয় দৈনিকে “ডিসির সইয়ের অপেক্ষায়’ মন্ত্রীর পরিবারের পকেটে ঢুকবে শত কোটি টাকা” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়।

এ বিভাগের আরো খবর