মাদারীপুরে ২০০৪ সালে জাকির হোসেন হত্যা মামলায় চার্জশিটভুক্ত সব আসামিকেই খালাস দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসমাইল হোসেন এ রায় দেন। রায়ে আসামিপক্ষ সন্তোষ প্রকাশ করলেও ক্ষোভ জানিয়েছেন বাদীপক্ষ।
খালাস পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খণ্ড ইউনিয়নের মাদবরকান্দি গ্রামের মৃত রশিদ মোড়লের ৪২ বছর বয়সী ছেলে গোলাম মাওলা, চরকাচিকাটা গ্রামের আদেল উদ্দিন শেখের ৪৫ বছর বয়সী ছেলে রব শেখ, একই গ্রামের সেকান ফকিরের ৬২ বছর বয়সী ছেলে লিটন ফকির, মাদবরকান্দি গ্রামের আব্দুল হামেদ দড়ির ছেলে ৭০ বছর বয়সী দলিল উদ্দিন দড়ি ও একই গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিম দড়ির ছেলে ৬৫ বছর বয়সী বাদশা দড়ি।
মামলার বিবরণ থেকে আদালত সুত্র জানায়, ২০০৪ সালের ২১ মে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খণ্ড ইউনিয়নের মাদবরকান্দি গ্রামের এসকেনদার আলীর ছেলে জাকির হোসেন বাড়ি থেকে শিবচর এলাকায় শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে বের হন। ওই ঘটনার দুইদিন পর ২৩ মে শিবচর উপজেলার বিলপদ্মা নদীর কেরানিবাট এলাকায় বস্তাবন্দি মস্তকবিহীন এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিনই অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে জাকিরের বাবা এসকেনদার আলী বাদী হয়ে শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
তৎকালীন শিবচর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজগর আলী তদন্ত শেষে গোলাম মাওলা, রব শেখ, লিটন ফকির, দলিল উদ্দিন দড়ি ও বাদশা দড়িকে অভিযুক্ত করে ২০০৪ সালের ৩০ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলার অভিযুক্তপত্রে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত আসামিরা জুয়া খেলার ৮০ হাজার টাকা ভাগাভাগি নিয়ে জাকিরকে কুপিয়ে হত্যা করেন। পরে লাশ যাতে শনাক্ত করতে না পারে, সে কারণে আসামিরা জাকিরের মাথা আলাদা করে শরীর বস্তায় ভরে ইটবোঝাই করে বিলপদ্মা নদীতে ফেলে দেন।
বিভিন্ন সময় আদালত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, মেডিক্যাল অফিসারসহ ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। যুক্তিতর্ক ও দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়া শেষে দোষ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত অভিযুক্ত ৫ জনকেই খালাস দেন।
মামলা চলাকালিন আসামি দলিলউদ্দিন দড়ির মৃত্যু হয়। তবে রায় ঘোষণার সময় বাকি ৪ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলী অ্যাডভোকেট সিদ্দিকুর রহমান সিং বলেন, ‘মামলায় সব আসামিদের খালাস দিয়েছে আদালত। এই রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সংক্ষুদ্ধ। আগামীতে রায়ের কপি পেলে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। সেখানে বাদীপক্ষ ন্যায়বিচার পাবে বলে আমরা বিশ্বাস রাখি।’
তবে সন্তোষ প্রকাশ করে আসামিপক্ষের আইনজীবী জাফর আলী মিয়া বলেন, ‘মামলাটি ক্লু-লেস হওয়ায় আদালতকে বুঝাতে সক্ষম হয়েছি যে, আসামিরা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত নয়। ফলে আসামিদের খালাস দিয়েছে আদালত। আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি।’