বাগেরহাটে চোর আখ্যা দিয়ে ফকির রনি নামের এক পোল্ট্রি ফিড ব্যবসায়ীকে রাতভর আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সদর উপজেলার ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুলের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী।
বুধবার গভীর রাতে ষাটগম্বুজ ইউনিয়নের পাটরপাড়া বারুইডাংঙ্গা গ্রামের এক ক্লাব ঘরে ফকির রনিকে আটকে রেখে আজিজুল পাশবিক নির্যাতন করেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।
ফকির রনি বাগেরহাট সদর উপজেলার সুন্দরঘোনা গ্রামের শামছু ফকিরের ছেলে।
ভুক্তভোগী বলেন, ‘২৩ মে খুলনার ফুলতলা থেকে পিকআপে করে আনা সরকারি ধানবীজ বাগেরহাটের মল্লিকের বেড়-সন্নাসী এলাকায় পৌঁছে দিই। সেখান থেকে বারুইডাঙ্গা এলাকায় শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হই। রাস্তার পাশে পিকআপ রেখে রাত ২টার দিকে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছিলাম।
‘রাত ৩টার সময় অপরিচিত একটি নম্বর থেকে ফোন দিয়ে আমাকে জানানো হয় যে আমার পিকআপের (মিনি ট্রাক) দরজা খোলা। খবর পেয়ে দ্রুত আমি রাস্তায় যাই। সেখানে গিয়ে দেখি আমার গাড়ির দরজা খোলা; গাড়ির সামনের লাইট ভাঙ্গা, ড্যাসবক্স ভাঙ্গা এবং ছাত্রলীগ নেতা আজিজুলের হাতে আমার গাড়ির কাগজপত্র।’
তিনি আরও বলেন, “আমাকে দেখামাত্র আজিজুল আমাকে বলেন, ‘তুই আমাদের দেখে দৌড় দিলি কেন? গাড়িতে রাখা গরুগুলো কোথায় গেল?’ এরপর পরই আমাকে মারধর শুরু করেন। থানায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে টানা-হেঁচড়া করে গাড়িতে উঠিয়ে পশ্চিমডাঙ্গা ক্লাবঘরে নিয়ে আমাকে প্রথমে আটকে রাখেন। এরপর শারীরিক নির্যাতন করেন।
‘আমাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়েছে; গায়ে জলন্ত সিগারেটের ছ্যাকা দিয়েছে। এতবেশি মেরেছে যে তখন মনে হচ্ছিল, এখনই বোধহয় মারা যাব।’
ফকির রনি বলেন, ‘পরবর্তীতে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. মোজাম ঘটনাস্থলে আসলে ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল আমাকে ছেড়ে দেন। ওনারা আমার পকেটে থাকা নগদ টাকাও নিয়ে গেছেন। অন্যায়ভাবে আমাকে যারা নির্যাতন করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেতা আজিজুল বলেন, ‘চোর সন্দেহে ফকির রনিকে ধরে আনা হয়। তাকে দুটো চড়-থাপ্পড় মারা হয়েছে। পরবর্তীতে ইউপি সদস্য মো. মোজাম ঘটনাস্থলে এসে ফকির রনি চোর নয় বলে জানালে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।’
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে. এম. আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘এক ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে মারপিটের ঘটনা শুনেছি। এ ঘটনায় ওই ব্যবসায়ী পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।’
অভিযোগটি থানায় পৌঁছালে এ বিষয়ে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।