গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনী এলাকায় মোট ভোট কেন্দ্র ৪৮০টি। এর মধ্যে ৩৫১টি কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বাকি ১২৯ কেন্দ্রকে সাধারণ কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের হিসাবে এই সিটির চার ভাগের তিন ভাগ (৭৩ দশমিক ১২ শতাংশ) কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ। এসব কেন্দ্রে নিরাপত্তায় বাড়তি ফোর্স মোতায়েন করেছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর এসব কথা বলেন। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এসব কেন্দ্রকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছে ইসি।
ইসি মো. আলমগীর বলেন, ‘কোনো থ্রেট না থাকলেও যেহেতু শিল্প এলাকা তাই দুষ্কৃতকারীরা বা যাদের অসৎ উদ্দেশ্য থাকে তারা যেন অন্যায় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে তাই বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
‘শিল্প এলাকা হওয়ায় গাজীপুর সিটিতে বিভিন্ন ধরনের মানুষের বসবাস। তাই মানুষের মধ্যে অপরাধ প্রবণতাও বেশি। তবে নির্বাচনী পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত ভাল।’
গাজীপুর সিটির ভোটে ৫৭টি ওয়ার্ডে ৭৪ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন জানিয়ে এই কমিশনার বলেন, ‘জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটও থাকবেন। সেখানে র্যাবের ৩০টি টিম থাকবে। বিজিবি’র প্রায় ১৩টি প্লাটুন থাকবে। এছাড়া স্ট্রাইকিং ফোর্স পুলিশের ১৯টি ও মোবাইল টিম হিসেবে ৫৭টি টিম থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৭ ও সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স থাকবে। অর্থাৎ আইন-শৃঙখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রচুরসংখ্যক সদস্য মোতায়েন থাকবে, যাতে কোনোরকম বিশঙ্খলা না হয়।’
ইসি আলমগীর বলেন, ‘কেউ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করলে সে যে দলের বা যেই হোক না কেন সঙ্গে সঙ্গে আইনের আওতায় আনতে বলা হয়েছে। ব্যক্তির সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই, অনিয়মের মাত্রার ওপর শাস্তি নির্ভর করবে।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৫ মে বৃহস্পতিবার। এদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে থাকবে সিসি ক্যামেরা, যা ঢাকা থেকে মনিটরিং করা হবে।
১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬জন ভোটার তাদের ভোটধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। তাদের মধ্যে পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী। এছাড়া ১৮ জন রয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার।
নির্বাচনে মেয়র পদে আটজন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৮জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন-মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির প্রাএমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান ও গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ।
এছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।