কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ ক্ষমা পেয়ে এক মাস আগে দলে সক্রিয় হন বেলকুচি পৌরসভার মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা। কিন্তু পৌরসভার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালাতে গিয়ে তিনি পদে পদে বাধার মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
মেয়র রেজার অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্য ও তার সমর্থকরা তাকে নানাভাবে হয়রানি করছেন। তাদের বাধার মুখে বিঘ্নিত হচ্ছে শহরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড।
মঙ্গলবার বেলকুচি পৌরসভার হলরুমে এক সংবাদ সম্মেলনে মেয়র রেজা এমন অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘পৌরসভার সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য পৌর এলাকায় এমপির সমর্থনে বানানো চারটি স্থায়ী তোরণ অপসারণের জন্য নোটিশ করা হয়। এতে ক্ষুব্ধ হন বেলকুচি-চৌহালী আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডল।
‘ওই নোটিশের জের ধরে ১৩ মে বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আমার উপস্থিতির খবর শুনে এমপির এপিএস সেলিম সরকার দলবল ও প্রশাসনের সহযোগিতায় আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীরা প্রশাসনের সহায়তায় দলীয় নেতাকর্মীদের মারধর করে।’
মেয়র বলেন, স্থানীয় পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও সাধারণ মানুষের অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের উদ্যোগে নির্মিত স্থায়ী তোরণ অপসারণের নোটিশ করা হয়। আর তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে এমপির সর্মথকরাই পরিকল্পিতভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে। এখন হামলাকারীরাই উল্টো আমাদের নামে মিথ্যা দুটি মামলা দিয়ে হেনস্থা করছে।’
পৌর শহরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে মেয়র সাজ্জাদুল হক রেজা বলেন, ‘স্থানীয় সরকারের অধীনে পৌরসভার যে কোনো উন্নয়নমূলক কাজের জন্য এমপি মহোদয়ের ডিও লেটারের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তিনি পৌরসভার উন্নয়নে কোনো ডিও লেটার দেন না। এতে পৌরসভার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বেলকুচির শান্ত পরিবেশ অশান্ত করতে একটি চক্র বরাবরই তৎপর। সামনেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ সময়ে নিজেদের মধ্যে এমন বিভক্তি দলের জন্য বির্পয়য় ডেকে আনতে পারে।’
বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসেন বলেন, ‘পৌর ছাত্রলীগ সেদিন বিক্ষোভ কর্মসূচি করার কথা ছিলো। এ সময় মেয়রের লোকজন তাদের ওপর হামলা করে। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উভয় পক্ষকে দলীয় কার্যালয় থেকে সরিয়ে দেই। তিনি বলেন, আমাদের সহোযোগিতার বিষয়ে মেয়রের বক্তব্য পুরোপুরি মিথ্যা।’
এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশানুর বিশ্বাস বলেন, ‘সেদিন দলীয় কার্যালয়ে কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রাম ছিলো না। তবে কেউ যদি ব্যক্তিগত কোনো প্রোগ্রাম করে তবে তার দায়ভার তাকেই নিতে হবে।’
সংসদ সদস্য আব্দুল মমিন মণ্ডল দেশের বাইরে অবস্থান করায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পৌর প্যানেল মেয়র মোহাম্মদ ইকবাল রানা, কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম, তারেক সরকার, মহিলা কাউন্সিলর স্বর্ণা পারভিন, নার্গিস বেগম উষাসহ পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।