রাজধানীর ধানমণ্ডিতে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় একাধিক গাড়ি ভাংচুরের শিকার হয়। এ সময় বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করে।
সংঘর্ষ চলাকালে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা একটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা চালায় বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে মঙ্গলবার ধানমণ্ডিতে বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে পদযাত্রা শুরু করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। পদযাত্রাটি জিগাতলায় সীমান্ত স্কায়ারের সামনে থেকে সিটি কলেজের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয়।
সংঘর্ষের সময় বিএনপির বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকরা কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। ছবি: নিউজবাংলা
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিএনপির মিছিলটি সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে আসার পর পদযাত্রায় অংশ নেয়া কিছু কর্মী-সমর্থক পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলায়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাদের ধ্বস্তাধ্বস্তি শুরু হয়।
এক পর্যায়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিক্ষোভকারীদের ওপর পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। বিএনপির কর্মী-সমর্থকরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে।
এ সময় বিক্ষুব্ধ হয়ে বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়ারও চেষ্টা চালানো হয়।
এই হামলা, সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে পদযাত্রায় অংশে নেয়া বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের দায়ী করা হয়েছে।
সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় মারমুখী বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা। ছবি: নিউজবাংলা
পুলিশের পক্ষ থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় তাৎক্ষণিক সংবাদ সম্মেলন করে বলা হয়, পদযাত্রাটি সিটি কলেজের সামনে এসেই শেষ হওয়ার কথা ছিল। সে অনুযায়ী পদযাত্রায় সামনের দিকে থাকা নেতাকর্মীরা সেখানেই থেমে যান। কিন্তু পেছনের সারিতে থাকা কর্মী-সমর্থকরা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে সামনের অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা চালায়। তারা পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আশরাফ হোসেন বলেন, ‘জিগাতলার দিক থেকে আসা বিএনপির পদযাত্রায় সামনের সারিতে থাকা নেতা-কর্মীরা খুবই ভালো আচরণ করেছেন। তবে পদযাত্রার শেষের সারি থেকে কিছু ছেলে পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে।’
তিনি বলেন, ‘পূর্বনির্ধারিত পদযাত্রাটি বাংলাদেশ মেডিক্যাল থেকে শুরু হয়ে আসার কথা ছিল সিটি কলেজ পর্যন্ত। খুব শান্তিপূর্ণভাবেই তারা শুরু করেছিল। প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার লোক ছিল পদযাত্রায়।’
সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় লাঠি হাতে বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের বিক্ষোভ। ছবি: নিউজবাংলা
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘সামনের সারিতে যেসব নেতা-কর্মী ছিলেন তারা খুব ভালো আচরণ করেছেন। এই পর্যন্ত (সায়েন্স ল্যাবরেটরি) এসে তাদের যা করার কথা ছিল তা-ই করেছেন। সিনিয়র সব লিডার চলে যান। কিন্তু পদযাত্রার শেষের সারি থেকে কিছু ছেলে পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা ইট-পাটকেল ছুড়ে মারে। ব্যানারের লাঠি দিয়ে পুলিশকে মারধর করে। পুলিশও পাল্টা জবাব দেয়ার চেষ্টা করে।
‘এই সংঘর্ষে আমাদের বেশ কিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি তারা না ঘটালেও পারত। এখন আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।’