বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কমিশন ভোট বাতিলের ক্ষমতা হারায়নি: ইসি রাশেদা

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২১ মে, ২০২৩ ১৬:৪৬

রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমি যতটুকু বুঝি যে, আমরা পারবো। কারণ আমরা ৯১ (ক) নিয়ে কোনো প্রস্তাবনাই দেইনি। যেটা প্রস্তাবনা যায়নি, সেটা তো বাতিল হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে মনে হয় না।’

সম্প্রতি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ সংশোধনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ার পর নির্বাচন কমিশন গাইবান্ধার মতো ভোট বাতিলের ক্ষমতা হারাতে যাচ্ছে বলে আলোচনা তৈরি হয়। তবে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানার মত, ভোট বাতিলের ক্ষমতা হারায়নি নির্বাচন কমিশন।

রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমি যতটুকু বুঝি যে, আমরা পারবো। কারণ আমরা ৯১ (ক) নিয়ে কোনো প্রস্তাবনাই দেইনি। যেটা প্রস্তাবনা যায়নি, সেটা তো বাতিল হওয়ার কোনো কারণ আছে বলে মনে হয় না।’

রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ইসি রাশেদা সুলতানা এ সব কথা বলেন।

গত ২৮ মার্চ আরপিও সংশোধনী প্রস্তাবটি নীতিগতভাবে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে তোলা হয়। তাতে উল্লেখ ছিল, ভোটের পর কোনো কেন্দ্রে, এমনকি পুরো নির্বাচনী এলাকার (আসন) ভোটে বড় ধরনের অনিয়ম, কারসাজি ও ভোটের প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়ার প্রমাণ পেলে গেজেট প্রকাশ স্থগিত এবং ভোট বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দেশ দিতে পারবে ইসি।

১৮ মে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদসচিব মাহবুব হোসেন জানান, নির্বাচনে কোনো ভোটকেন্দ্রে বড় ধরনের অনিয়ম, কারসাজি ও ভোট প্রক্রিয়ায় বাধা দেয়ার প্রমাণ পেলে নির্বাচন কমিশন সেই কেন্দ্রের ভোট বা ফল বাতিল করে পুনরায় ভোটগ্রহণের নির্দেশ দিতে পারবে। পুরো আসনের ভোট বাতিল করতে পারবে না। জাতীয় সংসদ নির্বাচন আইনের এমন বিধান রেখে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) ১৯৭২ সংশোধনের খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সংশোধনী প্রস্তাবে ইসি ভোটে অনিয়ম হলে পুরো আসনের নির্বাচন বা ফল বাতিলের ক্ষমতা চেয়েছিল।

গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) নির্বাচন বন্ধ করার প্রধান অনুচ্ছেদের প্রসঙ্গ টেনে নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘সেটা কিন্তু ৯১ এর ক। একটা নির্বাচনে তিনটা পর্যায়। প্রথম হলো নির্বাচন পূর্ব, আরেকটা হলো নির্বাচন চলাকালীন, একটা নির্বাচনের পরবর্তী; এই তিনটা ধাপের মধ্যে ৯১-এর ক যেটা আছে, সেটা কিন্তু নির্বাচন পূর্ব পর্যন্ত, নির্বাচন চলা পর্যন্ত।

‘ওইখানে কমিশনের একটা ক্ষমতা দেয়া আছে। সেই ক্ষমতায় কমিশন কোনো রকম অনিয়ম, কারচুপি যেটাই হোক, নির্বাচন কমিশনের নজরে এলে যদি দেখে এ রকম, তাইলে নির্বাচন বন্ধ করে দিতে পারে। এইটা তো আছেই আইনে, এক্সিসটিং।’

আরপিওর অধ্যায় ৭ এর ৯১ ক-তে উল্লেখ আছে, ‘যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হয় যে, নির্বাচনে বলপ্রয়োগ, ভীতি-প্রদর্শন এবং চাপ সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিরাজমান অপকর্মের কারণে যুক্তিযুক্ত, ন্যায়সঙ্গত এবং আইনানুগভাবে নির্বাচন পরিচালনা নিশ্চিত করিতে সক্ষম হইবেন না, তাহা হইলে ইহা যে কোনো ভোট কেন্দ্র বা, ক্ষেত্রমত, সম্পূর্ণ নির্বাচনি এলাকায় নির্বাচনের যে কোনো পর্যায়ে ভোট গ্রহণসহ নির্বাচনি কার্যক্রম বন্ধ করিতে পারিবে।’

বিভ্রান্তির প্রসঙ্গ টেনে রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘অনেকে মনে করছেন যে ৯১ (ক)-তে যে ক্ষমতাটা ছিল, নির্বাচন চলাকালীন নির্বাচন বন্ধ করে দেয়ার যে সুযোগটা, সেটা বোধহয় খর্ব হয়েছে। বিষয়টা তা নয়। আমি যতটুকু বুঝি, ওইটা তো হবেই না। কেননা আমরা তো ওইটা চাই-ই নাই।

‘সেখানে প্রস্তাবনা হলো ৯ (ক) এর সঙ্গে ক (ক) বলে আরেকটা উপ-অনুচ্ছেদ যোগ দেয়া। রিটার্নিং অফিসার ফলাফল প্রকাশের পর থেকে গেজেট হওয়ার আগ পর্যন্ত সময়টা অনিয়ম হলে যেন ব্যবস্থা নেয়া যায়, সেই ক্ষমতাটা চাওয়া হয়েছে।’

রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘আমরা যেটা এখানে এসে দেখলাম, নির্বাচনের ফলাফলের তিনটা পর্যায়। আপনারা জানেন যে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা কেন্দ্রে কেন্দ্রে একটা রেজাল্ট দেন, এই রেজাল্ট চারটা কপি করা হয়। একটা প্রার্থীদের জন্য, একটা সাঁটানোর জন্য, একটা রিটার্নিং কর্মকর্তার জন্য, আরেকটা কপি করতে হয়।

‘এগুলো করার পর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ফলাফল ঘোষণা করে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠান। কিন্তু কেন্দ্রে নয়, অন্যখানে থাকেন। এরপর তিনিও ফলাফল ঘোষণা করেন। সেই রেজাল্ট কিন্তু প্রাইমারি রেজাল্ট। ওইটা চূড়ান্ত নয়। ওইটার ওপর কিন্তু কে জিতল তার কার্যক্রম শুরু হবে না। শুরু হবে কখন, যখন কমিশন থেকে গেজেট হবে।’

কমিশনে ফলাফল পাঠানোর ক্ষেত্রে অনেক সময় অভিযোগ আসে জানিয়ে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘এই সময়টার মধ্যে কোনো অভিযোগ এলে কমিশনের হাতে কোনো ক্ষমতা নাই। সেই অভিযোগের বিষয়ে কমিশন কিছু করতে পারে না। তাকে গেজেটটা করে দিতে হয়।

‘যদি বড় ধরনের কোনো অভিযোগ থাকে, যে সত্যিকার অর্থেই বড় কোনো অনিয়ম ঘটে গেছে, সেটা রেখেই যদি একটা গেজেট করে দেয়া হয়, তখন কিন্তু যারা অভিযোগ তোলেন তাদের কিন্তু একটা কষ্ট থেকেই যায়।’

রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘যে কারণে কমিশনের প্রতি একটা অনাস্থা থেকেই যায় যে-আমরা একটা অভিযোগ দিলাম, কমিশন যাচাই-বাছাই কিছু না করে রিটার্নিং কর্মকর্তা যে রেজাল্ট দিল, সেটাই তারা বাস্তবায়ন করে ফেলল। একাট ক্ষোভ কিন্তু তৈরি হয়। একটা নির্বাচন করছেন, কাজেই তার কথাটা তো আমলে নেয়া উচিত। এই জায়গাটাতেই আমরা চিন্তা করলাম যে শূন্য আছে। কমিশনের হাতে কোনো সুযোগ নাই।

‘আমরা সেখানেই একটা নতুন প্রস্তাবনা পাঠালাম সংশোধনীতে, যেটা মন্ত্রিপরিষদে গেছে। আমরা পাঠালাম ৯-এর ক, তার সঙ্গে ক-এর ক বলে একটি উপ-অনুচ্ছেদ যোগ করতে হবে। সেখানে কোনো অনিয়মের তথ্য বা অভিযোগ এলে কমিশন সেই গেজেট নোটিফিকেশনটা স্থগিত রাখবে। এরপর তদন্ত করে যদি অভিযোগটার সতত্যা প্রমাণ হয় যে, আসলেও বড় ধরনের অনিয়ম হয়ে গেছে, সেখানে তখন কমিশন সুনির্দিষ্টভাবে যে জায়গাটায় অনিয়ম হয়েছে, সেই জায়গাটার যে কেন্দ্র বলেন বা যে আসনটার ভোট বাতিল করার জন্য চাচ্ছিলাম, মন্ত্রিপরিষদ ওখানে পুরো আসনের কথাটা বাদ দিয়ে সেটা খণ্ড করে আংশিকভাবে একটা অনুমোদন দিয়েছেন। আমরা পুরোটা কপি এখনো দেখি নাই।’

পাঁচ সিটি নির্বাচনে ইসি সবার প্রতি সমান দৃষ্টি দিচ্ছে না বলে প্রশ্ন উঠেছে, এর জবাবে এই কমিশনার বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা ঘটে, পেপার-পত্রিকায় যদি এসে থাকে আমার ব্যবস্থা নেব। কোনো ধরনের নমনীয়তার কোনো সুযোগই নেই।’

তিনি বলেন, ‘কমিশনের কাছে কেউ তো লিখিত কোনো অভিযোগ আনে নাই। অভিযোগ এলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমরা আসলেই চাই সবগুলো নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হোক। কমিশনের ইচ্ছার কোনো কমতি নাই।’

গাইবান্ধার ভোট প্রসঙ্গে এই কমিশনার বলেন, ‘গাইবান্ধায় আমরা যখন সিসি ক্যামেরায় নানান ধরনের অনিয়ম দেখছিলাম, গোপন কক্ষের মধ্যে ভোটার ভোট দেয়ার আগেই অন্য কেউ দিয়ে দিচ্ছেন, ওখানে আসলে কোনো ভোটারই ভোট দিতে পারছে না। তখন কিন্তু আমরা ৯১ (ক) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে নির্বাচনটা বন্ধ করেছি। এখন আমরা চাচ্ছি এক বা একাধিক কেন্দ্র যেখানেই হোক, রিটার্নিং কর্মকর্তার ফলাফল ঘোষণার পর এবং গেজেট হওয়ার আগ পর্যন্ত, এই মধ্যবর্তী সময়ে অভিযোগ এলে সেটা যেন তদন্ত করে বন্ধ করতে পারি এবং সেখানে নতুন করে ভোট হবে।

‘যেখানে ছিলই না, সেখানে তো কিছুটা হলেও বাড়ল। পুরোটা না হলেও কিছুটা তো অর্জন হয়েছে। পুরোটা বাতিলের ক্ষমতা পেলে ভালো। কেননা, যারা অনিয়ম করে তাদের একটা ভয় থাকতো যে ভোট বাতিল হয়ে আবার হ্যাপাটা নিতে হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর